ঢাকা, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২, ১০ মে ২০২৫, ১২ জিলকদ ১৪৪৬

শিক্ষা

‘শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা লালনের দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০৪, মে ১০, ২০২৫
‘শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা লালনের দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে’

ঢাকা: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা লালনের দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। দুই মন্ত্রণালয়ে আমাদের এমন কিছু কাজ করা প্রয়োজন যাতে আজকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যে প্রতিভার সাক্ষর রেখে গেল তাদের এই প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈরি করা।

শনিবার (১০ মে) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাল্টিপারপাস কনফারেন্স হলে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধন ও প্রাথমিক শিক্ষা পদক দেওয়া অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

‘মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করি, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’-স্লোগান নিয়ে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শুধুমাত্র প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালায়ই নয়, সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা কী হওয়া উচিত এই স্লোগানের মধ্যে অন্তর্নিহিত রয়েছে। তাই আমাদের সীমিত সম্পদ, সরকারে আমাদের সীমিত সময় ও সুযোগের মধ্যে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।  

তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে দেশ গড়ার কারিগরদের তৈরি করার প্রতিষ্ঠান। এখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু একটা করার ক্ষেত্রে সরকারের সময় কম হলেও আমি দায়িত্বের চাপ অনুভব করছি।  

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন ধাপগুলো পেরিয়ে শিক্ষার্থীদের টারসিয়ারি ইনস্টিটিউশন পর্যন্ত দেখভালের দায়িত্ব রাষ্ট্র বহন করছে। শিক্ষার্থীদের পরিবারগুলো এ দায়িত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে অর্পণ করেছে। কিন্তু আমরা জানি বহুলাংশে সেগুলোর ক্ষেত্রে নানা রকমের ব্যত্যয় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার সামাজিক অবস্থান ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যদি ভালো কিছু করে ভালো হয়, খারাপ কিছু করলে খারাপ হয়। ভালো কিছু করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে সবার সম্মিলিত সহযোগিতা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকতা একটি মহান পেশা, এটা বুলি নয়। শিক্ষকরা শুধু চাকরি করতে আসেন না, তারা শিক্ষার্থীদের দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিয়েছেন। আমাদের সম্পদের অপ্রতুলতার কারণে শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মান দিতে পারছি না। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব রয়েছে এই মহান পেশায় যে শিক্ষকরা রয়েছে তাদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার। প্রাইমারি শিক্ষক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পর্যন্ত আমাদের আচার-আচরণে তাদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়া উচিত। আজকের প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি, আমরা শিক্ষকদের মর্যাদা সমুন্নত রাখবো।  

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, গভর্নিং বডি ছাড়া যারা অভিভাবক রয়েছেন তারা যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে নজর রাখেন তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সমস্যা থাকবে না। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ, গান, আবৃতি, খেলাধুলা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে শিক্ষার্থীরা উৎসাহিত হবে, পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটবে। এসব আয়োজনে অভিভাবক ও সমাজের সব স্তরের লোকজনের সহযোগিতা প্রয়োজন। শিক্ষা হচ্ছে বৈষম্য দূরীকরণে সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার। একটি শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য শিক্ষা বড় রকমের ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্রের উচিত এই শিশুদের এমন পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া যাতে তার সুপ্ত প্রতিভাগুলো বিকাশ ঘটাতে পারে। শিক্ষা শুধু চাকরি বা ব্যবসা করার জন্য না, শিক্ষা হচ্ছে একজনকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য, যাতে তার মধ্যে ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে পড়ার চাপ কমিয়ে তাদের নাচ, গান, আবৃতি ও খেলাধুলায় আগ্রহী করে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা।

এমআইএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।