ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

আপত্তির মুখে রাবিতে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২০
আপত্তির মুখে রাবিতে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল রাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি): অনিয়মের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেসের সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক নিয়োগের বোর্ড বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে তার বাসভবনে বোর্ড অব গর্ভনেন্স সভায় সদস্যদের আপত্তির মুখে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বোর্ডে উপস্থিত থাকা একাধিক অধ্যাপক।

গত মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) শিক্ষক নিয়োগের সাক্ষাতকার নিয়েছিলো প্রশাসন।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইনস্টিটিউটের বোর্ড অব গর্ভনেন্স সদস্য এক সিনিয়র অধ্যাপক বলেন, অনেক প্রার্থী ছিলেন, তাদের নানা অজুহাতে বাদ দেওয়া হয়েছে। দুই পদের ওই নিয়োগ পরীক্ষায় ১৩ জন আবেদনকারী প্রবেশপত্র পাননি। আবার কিছু বিশেষ প্রার্থির যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও তাদেরকে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে। আর পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অসংখ্য ত্রুটি ও পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। ওই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ, জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত নানা ত্রুটি ও অনিয়ম তুলে ধরেন। পরে বোর্ড সভার অন্য সদস্যরাও বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলেন। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বোর্ডের সভাপতি উপাচার্য নিয়োগটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত দেন এবং কীভাবে এই সমস্যা নিরসন করে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যায়, সে বিষয়ে সুপারিশ করেন।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএসসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ ও ২০১৭ সালের তিনটি পুরনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বর্তমান প্রশাসন সহযোগী ও সহকারী এই দুই পদে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হয় গত মঙ্গলবার। একটি সহকারী অধ্যাপক পদের বিপরীতে আবেদন পড়েছিল মোট ৭টি। এর মধ্যে ওই বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন মাত্র দুইজন। এ কারণে ওই পরীক্ষাটিই স্থগিত হয়ে যায়।

অপরদিকে দুটি সহযোগী অধ্যাপক পদের বিপরীতে আবেদন করেন মোট ১৭ জন। এর মধ্যে নানা অজুহাতে ১২ জনকে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন আবেদনকারীরা। তবে ওই বোর্ডে ৪ জন উপস্থিত থাকায় ওই দিন সাক্ষাতকার বোর্ডের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পেরেছিলো প্রশাসন।

ইনস্টিটিউটগুলোর নিয়ম অনুযায়ী, সাক্ষাতকার গ্রহণের পর প্রথমে একটি বোর্ড অব গভরনেন্স সভা হয়ে পরে সিন্ডিকেটে গিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়। কিন্তু এই বোর্ডের অধিকাংশ সদস্য নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নিয়োগ প্রক্রিয়াটিকে অবৈধ দাবি করেন। পরে সদস্যদের আপত্তির মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বন্ধ করার ঘোষণা দেন।

আবেদনকারীরা অভিযোগ করে আসছিলেন, ২০১৫ ও ২০১৭ সালের পুরনো বিজ্ঞপ্তিতে সহকারী ও সহযোগী মিলিয়ে মোট ৪ পদে মোট ২৪ জন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু অন্যায়ভাবে তাদেরকে কর্তৃপক্ষ প্রবেশপত্রও দেয়নি। তাদের অনেকের এশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি ছিলো। অনেকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যোগ্যতাও ছিলো। কর্তৃপক্ষ প্রবেশপত্র না দেওয়ার কারণ হিসেবে এশিয়ার ডিগ্রি গ্রহণযোগ্য নয় বলে তাদেরকে মৌখিকভাবে জানিয়েছিলো।  

আবেদনকারীদের অভিযোগ, একজন প্রার্থী একটি কলেজ থেকে দুই বছরের ভুয়া অভিজ্ঞতার কাগজপত্র অভিজ্ঞতা হিসেবে দাখিল করেছিলেন। কিন্তু আদৌ তিনি সেই কলেজের কোনো শিক্ষকই ছিলেন না বলে তারা প্রমাণ পেয়েছে। তবুও তাকে প্রবেশপত্র দিয়েছিলো কর্তৃপক্ষ।  

জানতে চাইলে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. ফিরোজ আলম বলেন, সভায় অনেকগুলো সুপারিশ এসেছে। এগুলো সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।