ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

স্বাস্থ্য

রোগীর চাপ সামলাতে ঢামেকের নানা উদ্যোগ, যুক্ত হচ্ছে নতুন সরঞ্জাম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৪৫, অক্টোবর ১০, ২০২৫
রোগীর চাপ সামলাতে ঢামেকের নানা উদ্যোগ, যুক্ত হচ্ছে নতুন সরঞ্জাম

ঢাকা: দেশের সাধারণ মানুষের ভরসা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল প্রতিদিন হাজারো রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। সীমিত সম্পদেও হাসপাতালটি কখনও কোনো রোগী ফিরিয়ে দেয় না।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে সাম্প্রতিক সময়ে ঢামেকে রোগীসেবা বাড়াতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ঢামেকের উপপরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘চব্বিশের আন্দোলনের সময় সীমিত সম্পদেও ঢাকা মেডিকেল সেরা সেবাটি দিতে পেরেছিল। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা মিলে আহত জুলাইযোদ্ধাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখিয়েছেন। ’

তিনি জানান, আহত জুলাইযোদ্ধাদের জন্য আগস্টের পর ঢামেকে বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়, যেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসার পাশাপাশি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মানসম্পন্ন খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের ফলোআপ চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশেষ বুথ, যাতে দ্রুত বিশেষজ্ঞ সেবা নিশ্চিত করা যায়।

আগস্টের পর ঢামেকের অবকাঠামোতেও এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। বাড়ানো হয়েছে বেড সংখ্যা, যুক্ত হয়েছে নতুন আইসিইউ ইউনিট। এর ফলে আরও বেশি মুমূর্ষু রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। একইসঙ্গে চীনের দুটি বৃহৎ হাসপাতালের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি হয়েছে, যার মাধ্যমে চীনা দূতাবাস ঢামেককে উপহার দিয়েছে ২৬টি আধুনিক ভেন্টিলেটরসহ কোটি টাকার সরঞ্জাম।

জরুরি বিভাগে চিকিৎসকের সংখ্যা বৃদ্ধি ও আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজনের ফলে এখন আগত রোগীরা আগের তুলনায় দ্রুত চিকিৎসা পাচ্ছেন। ভ্যাকসিন সেন্টারের পাশে সাধারণ রোগীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ৬০–৭০ জনের বসার উপযোগী বিশ্রামাগার। বহির্বিভাগে স্থাপন করা হয়েছে নতুন টিকিট কাউন্টার, যেখানে ডিজিটাল সিস্টেম চালুর প্রস্তুতি চলছে। এতে রোগীদের আর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হবে না।

নতুন আল্ট্রাসাউন্ড কম্পাউন্ডে বেশকিছু আধুনিক মেশিন যুক্ত হওয়ায় প্রতিদিন আরও বেশি পরীক্ষা করা যাচ্ছে। পুরাতন ভবনের পাশে স্থাপিত স্যাম্পল কালেকশন বুথ ও রিপোর্ট ডেলিভারি সেন্টারের ফলে রোগীদের এখন আর দূরে যেতে হয় না।

প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা ও কার্ডিওলজি বিভাগেও যুক্ত হয়েছে নতুন যন্ত্রপাতি ও ১৫টি অতিরিক্ত বেড, যা হৃদরোগীদের জন্য বিশেষ সুবিধা তৈরি করেছে।

সবচেয়ে বড় উদ্যোগ হিসেবে কোভিড-১৯ মহামারির সময় বন্ধ থাকা বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিটটি আধুনিকায়নের পর পুনরায় চালু করা হচ্ছে শনিবার (১১ অক্টোবর)। এতে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা এখন ঢামেকেই ন্যূনতম খরচে উন্নত চিকিৎসা পাবেন।

ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এই ইউনিট পুনরায় চালুর জন্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

ডা. আশরাফুল আলম বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়া মানে একধরনের যুদ্ধ জয়ের সমান। আমরা সীমিত সম্পদেও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি রোগীদের মুখে হাসি ফোটাতে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি নেই। ’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সহযোগিতা ও সাধারণ মানুষের আস্থা আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। সবাই যদি একটু সহনশীল হন, তবে ঢামেকের সেবার মান আরও উন্নত করা সম্ভব।

এজেডএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।