ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

আগ্রাসনের মুখে উপমহাদেশের তাঁতিরা

রক্তিম দাশ, কলকাতা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১০
আগ্রাসনের মুখে উপমহাদেশের তাঁতিরা

কলকাতা: ভারতের বাংলার তাঁতিদের তৈরি বস্ত্র এক সময় রোম সম্রাটরা স্বর্ণ দিয়ে কিনতেন। সেই বাজার নষ্ট করতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পনি চালু করেছিল ম্যানচেস্টারের মিলে তৈরি সস্তা কাপড়।

কেটে দেওয়া হয়েছিল বাংলার তাঁতিদের হাতের আঙ্গুল। সেসব এখন অতীত হলেও আবারও আগ্রাসনের মুখে উপমহাদেশের তাঁতিরা। এখন বাজারে এসেছে চীনে তৈরি বেনারসি আর মেসিনে বোনা জামদানি শাড়ি।

চীনে তৈরি বেনারসি প্রায় আসলের মতো। তফাত শুধু কাপড়ের মানে।

কলকাতার বড়বাজারে এরইমধ্যেই পূজার বাজার দখল করতে চলে এসেছে এই বেনারসি।

বস্ত্র ব্যবসায়ী অমৃক আগরওয়াল বাংলানিউজকে বলেন, ‘সস্তা হওয়ায় নকল বেনারসি কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা। বিক্রিও হচ্ছে অনেক। সামনেই হিন্দুদের বিয়ের মওসুম তখন বিক্রি আরও বাড়বে। ’

ভারতর বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী পানাবাকা লক্ষ্মী সাংবাদিকদের বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশ সরকার বেনারসি শাড়িকে জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশান অব গুডসের আওতায় নিয়ে এসেছেন। যাতে অন্য কোনো দেশ সরকারিভাবে এর ওপর কপিরাইট দাবি করতে না পারে। ’

শুধু বেনারসি নয় বিপদ আসছে এবার বাংলাদেশের তাঁতিদের ওপরও। কলকাতার বাজারে এসে গেছে মেসিনে তৈরি জামদানি শাড়ি।

বস্ত্র ব্যবসায়ী শ্রীশচন্দ্র দাস বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ থেকে জামদানি শাড়ি আমদানি করি। কলকাতায় পদ্মার ইলিশের পর এর চাহিদা ব্যাপক। কিন্তু মেসিনে তৈরি জামদানি দামে কম হওয়ায় ক্রেতা এখন সেই দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। ’

তিনি আরও জানান, হাতে বোনা জামদানি থেকে মেশিনে জামদানির জমাট ভাবটা কম দামেও সস্তা। ৬০০-৮০০ রুপির মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে কলকাতার বাজারে।

সমুদ্রগড় তাঁত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কার্তিক ঘোষ জানান, জামদানি শাড়ির প্রতি দুর্বলতার বিষয়টি মাথায় রেখে ব্যবসায়ীরা এই শাড়ি বাজারে এনেছে।

ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যে বিদেশি সিল্কে আমদানি শুল্ক কম হওয়ায় এই আগ্রসনের মূল কারণ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এ কারণে ঢাকার মিরপুরে তৈরি হওয়া বেনারসি শিল্পের অবস্থাও খারাপ হচ্ছে। কারণ এই বেনারসি বাংলাদেশেও ব্যাপক আমদানি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।