কোপিয়াপো: চিলির খনিতে গত ৫ আগস্ট থেকে আটকে পড়া ৩৩ শ্রমিকের কাছে পৌঁছে গেছে উদ্ধারকারী ড্রিল মেশিন। কর্মকর্তারা শনিবার এ ঘোষণা দিয়েছেন।
খনির একটি ছাদ ওই ড্রিল মেশিনের সাহায্যে ভেদ করার পর এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ড্রিল মেশিন শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে গেছে এমন সংবাদ পাওয়ার পরই খনির আশপাশে আনন্দে সাইরেন বেজে উঠে। শ্রমিকদের আত্মীয়স্বজনরা পতাকা উড়িয়ে, গান গেয়ে উদযাপন করছেন মুহূর্তটি।
শনিবার স্থানীয় সময় ৮টা ৫ মিনিটে ড্রিলকর্মীরা তাদের দুই হাজার ৪৭ ফুট নিচে খনির একটি
ছাদ ফুটো করেন।
খনিতে আটকে পড়া ১৯ বছর বয়সী হিমি’র মা হানে লাক বলেন, ‘এট অসাধারণ মুহূর্ত। মনে হচ্ছে শেষ পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা যাচ্ছে। ’
ড্রিলটি আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়ার্কশপের ভিতরে ঢুকে পড়লে ক্যামেরায় খনিশ্রমিকদের আনন্দ-উল্লাস করতে দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৌশলী ও শ্রাম টি-১৩০ ড্রিলের ভারপ্রাপ্ত গ্রেগরি হল বলে, ‘খনিশ্রমিকরা পাগলপ্রায় হয়ে যাচ্ছে। তাদের বাড়ি ফেরার এটি একটি বড় ধাপ। আমি জানি না তারা এটা কিভাবে পারল। তাদের মনোবল অত্যন্ত দৃঢ়। ’
আটকেপড়া শ্রমিকদের জন্য যন্ত্রণাকাতর অপক্ষার পালা প্রায় শেষ। বিশেষভাবে ক্যাপসুলে করে তাদের উদ্ধার করে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হবে।
তবে এবার উদ্ধার অভিযানের কঠিনতম ( তাদের ভাষায় `ভয়াবহ পর্যায়`) পর্যায়` শুরু হলো বলেও ভাবা হচ্ছে।
এবার খনিশ্রমিকদের তাদের নিজেদের দক্ষতা প্রয়োগ করতে হবে। ডিনামাইট বসিয়ে টানেলের পাথর উড়িয়ে দিয়ে রাস্তা তৈরি করতে হবে, যাতে উদ্ধারকারী ক্যাপসুল সেখানে অবতরণ করতে পারে।
খনিশ্রমিকদের কাছ থেকে উদ্ধারকর্মীরা প্রথমে ভিডিও তথ্য নেবেন। সেটা দেখে এই সিদ্ধান্ত আসতে হবে যে, ডিনামাইট বিস্ফোরণের সময় পাথর পড়া বন্ধ করতে নিচে কোনো ইস্পাতের কেস বা আবরণ দেওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা। এরপরই খনিশ্রমিকরা নিরাপদে ভূ-পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসবেন। আর এরই মধ্য দিয়ে সমাপ্তি রচিত হবে মানবেতিহাসের সবচে জটিল আর সবচে প্রযুক্তিনির্ভর এক উদ্ধার মহাকাব্য । দাতেঁ দাঁত চেপে এখন তারই রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষা; প্রতীক্ষা ঘোর দুর্বিপাককে হটিয়ে দিয়ে সোল্লাসে জীবনের কেতন ওড়ানোর।
বাংলাদেশ সময়: ০৭০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১০