ঢাকা: ক্যারিবীয় রাষ্ট্র জ্যামাইকার কুখ্যাত মাদক সম্রাট ক্রিস্টোফার ডুডুস কোককে ২৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। যুক্তরাষ্ট্রে মাদক চোরাচালান ও সহিংসতার জন্য গত বছরের আগস্ট মাসে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
শুক্রবার কোককে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের জেলা আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার আগে কোক নিজেকে একজন সুশীল মানুষ হিসেবে দাবি করেন। বিচারক রবার্ট প্যাটার্সন কোককে মাদক পাচারের দায়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড এবং সহিংসতার জন্য তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। তবে দুটি সাজার মেয়াদ এক সঙ্গেই কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
নিজ দেশ জ্যামাইকায় যথেষ্ট ক্ষমতাশালী এই অপরাধী সম্রাটকে আইনের কাঠগড়ায় আনতে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। জ্যামাইকা প্রশাসনের একটি অংশের ছত্রচ্ছায়ায় কোক তার অপরাধ সাম্রাজ্য পরিচালনা করতেন বলে ধারণা করা হয়। এর ফলে তিনি দীর্ঘদিন আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরে অবস্থান করতে সক্ষম হন।
৯০’র দশকের গোড়ার দিকে কোক ‘শোওয়ার পস’ নামের একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ সংগঠন গড়ে তোলেন। এই সংগঠনের মাধ্যমে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রে মারিজুয়ানা, কোকেইন ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য পাচারের একটি চক্র পরিচালনা করতেন। তার অপকর্ম নিউইয়র্ক, মিয়ামি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্যারিবীয় দেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো।
জ্যামাইকা থেকে গ্রেফতার করে কোককে গত ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। জ্যামাইকার রাজধানী কিংস্টোনে একটি বিশাল এলাকা ঘিরে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন কোক। যুক্তরাষ্ট্রের খাতায় ‘গ্যারিসন কমিউনিটি’ নামের পরিচিত টিভোলি গার্ডেন নামের এই এলাকা আন্তর্জাতিক মাদক পাচারের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কোকের অনুগত তরুণরা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে এই এলাকায় প্রহরা দিতো। এ সব অস্ত্রের বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রের কালো বাজার থেকে সংগ্রহ করে চোরাপথে জ্যামাইকায় পাচার করা হতো জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি কোককে ১৫ লাখ ডলার জরিমানাও করা হয়েছে। এদিকে কোকের কারাদ-ের খবরে সন্তোষ প্রকাশ করেছে জ্যামাইকার কর্তৃপক্ষ। জ্যামাইকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পিটার বানটিং এক বিবৃতিতে বলেন,‘ কোকের বিচার ও শাস্তি হওয়া অন্যান্য বড় বড় অপরাধীদের এই বার্তায় দেয় যে, কেউই আইনের উর্দ্ধে নয়। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১২
সম্পাদনা:রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর