ঢাকা: ইউরো ২০১২ ফুটবলকে ঘিরে পোল্যান্ড ও রাশিয়ার ফুটবল সমর্থকদের মধ্যে করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। পোল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচের আগ দিয়ে রাশিয়ার ফুটবল সমর্থকদের একটি র্যালি আয়োজনের পরিকল্পনাকে ঘিরে এই উত্তেজনা সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
রাশিয়ার জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশটির ফুটবল সমর্থকরা পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশে র্যালি বের করবে। এর অল্প পরই শুরু হবে স্বাগতিক পোল্যান্ডের সঙ্গে রাশিয়ার ফুটবল ম্যাচ। ম্যাচের আগ দিয়ে এই র্যালি উভয় দেশের ফুটবল সমর্থকদের মধ্যে তিক্ততা আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনিতেই পূর্ব ইউরোপের এই দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক বিরোধ বিদ্যমান। অতীতে পোল্যান্ডে আগ্রাসন চালানোর পাশাপাশি প্রায় শতাব্দীকাল দেশটিকে দখলে রাখে রাশিয়া।
এদিকে র্যালিকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পোলিশ সরকার রাজধানী ওয়ারশে ৬ হাজারের বেশি পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন করেছে বলে জানা গেছে। তবে এই রাশিয়ান সমর্থকদের এই র্যালির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে পোল্যান্ডের রক্ষণশীল দলগুলো। রক্ষণশীল প্রধান বিরোধীদল এই র্যালীকে উস্কানি হিসেবে অভিহিত করে এর নিন্দা জানিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে স্থানীয় সময় বিকাল ৫ টার দিকে এই র্যালি শুরু হতে পারে। ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙ্গে যাওয়ার পর সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করার দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে পালিত হয় রাশিয়ায়।
পোলিশ সংবাদমাধ্যমে আশঙ্কা করা হচ্ছে এই র্যালিতে কোনো কোনো রাশিয়ার সমর্থক হয়ত সাবেক সোভিয়েত পতাকা প্রদর্শন করতে পারে। উল্লেখ্য, পোলিশ নাগরিকরা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ব্যাপারে মারাত্মকভাবে স্পর্শকাতর। কারণ সোভিয়েত আমলে অনেক পোলিশ নাগরিক সোভিয়েত শাসকদের দ্বারা মারাত্মকভাবে অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হন।
পোল্যান্ডের বিরোধী দল সমর্থক একটি পত্রিকা এই র্যালির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হেডলাইন করেছে ‘র্যালি না সড়ক যুদ্ধ”?। অবশ্য র্যালির বিপরীতে পোলিশ ফুটবল সমর্থকরা কোনো কর্মসূচি পালন করবে না বলে জানা গেছে।
এদিকে ইউরোপিয়ান ফুটবলের শাসক সংস্থা উয়েফা রাশিয়ার সমর্থকদের বিরুদ্ধে উচ্ছৃংখল আচরণ করার অভিযোগ তদন্ত করে দেখছে। তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বর্ণবাদী ও অফুটবলীয় আচরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি চেক রিপাবলিকের সঙ্গে রাশিয়ার ম্যাচের দিন রুশ সমর্থকরা স্টেডিয়ামের কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায় বলে ক্যামেরায় ধরা পড়ে। ম্যাচে রাশিয়ার জয়ের পরই ওই সমর্থকরা মাঠের পোলিশ স্টুয়ার্ডদের চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারে। মারধোরের শিকার কমপক্ষে চার স্টুয়ার্ডকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে বলে জানা গেছে।
পাশাপাশি চেক রিপাবলিকের এক মাত্র আফ্রিকান বংশোদ্ভুত খেলোয়ার থিওডোর জেব্রেসেলাসি ম্যাচচলাকালীন সময়ে রাশিয়ার সমর্থকদের বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। উয়েফা এ ব্যাপারেও তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০২ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১২
সম্পাদনা:রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর