ঢাকা: আফ্রিকা মহাদেশজুড়ে আকাশপথে গোপন নেটওয়ার্ক আরো বিস্তৃত করছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই অঞ্চলে আল কায়েদা এবং অন্য জঙ্গি গ্রুপগুলোর ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতেই এ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে মার্কিন নিরাপত্তা বাহিনী।
মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, এক ইঞ্জিনের ছোট্ট এবং প্রায় সনাক্ত অযোগ্য বিমান ব্যবহার করে সারা আফ্রিকায় পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করা হয়। এসব বিমানে করে নির্দিষ্ট ঘাঁটি থেকে আফ্রিকা মহাদেশের অনেক গভীরে হাজার হাজার মাইল বিস্তৃত অঞ্চলে নজরদারি করা সম্ভব।
পত্রিকাটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ গোপন গোয়েন্দা কর্মসূচি অবশ্য ২০০৭ সাল থেকে চলছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর এ ধরনের তৎপরতা বহুগুণে বেড়েছে। এর মাধ্যমে আল কায়েদার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দশকব্যাপী গোয়েন্দা অভিযানে সামরিকীকরণ প্রক্রিয়া আরো জোরদার হয়েছে।
ইতোমধ্যে বারকিনা ফাসো এবং মৌরিতানিয়াতে ঘাঁটি গেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব ঘাঁটি থেকে এ ইসলামিক মাগরেব অঞ্চলে আল কায়েদার ওপর গোয়েন্দা নজরদারি করা হয়। আর উগান্ডার ঘাঁটিটি ব্যবহার করা হয় জোসেফ কোনি নেতৃত্বাধীন লর্ডস রেসিসটেন্স আর্মির ওপর নজরদারি করতে। এ গেরিলা সংগঠনটি নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত এবং এর নেতা জোসেফ কোনির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলেছে, কোনিকে ধরার জন্য দক্ষিণ সুদানেও ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই কোনি মধ্য আফ্রিকার দুর্গম কিছু এলাকায় ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা এবং ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের জন্য অভিযুক্ত।
এদিকে পূর্ব আফ্রিকার জিবুতি, ইথিওপিয়া, কেনিয়া এবং সেচেলেস দ্বীপপুঞ্জে সোমালি জঙ্গি গ্রুপ আল শাবাবের ওপর নজরদারি করতে মার্কিন বিমান বাহিনীর গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। অভিযানের সময় এ অঞ্চলে জঙ্গিদের লক্ষ্য করে একাধিকবার বিমান হামলাও হয়েছে বলে জানা যায়।
দৈনিকটির প্রকাশিত তথ্য মতে, এসব গোয়েন্দা কাজে ব্যবহৃত বিমানগুলো এক ইঞ্জিনের পিলাটুস পিসি-১২ মডেলের, ছোট্ট যাত্রীবাহী বিমান, আবার কখনো বড় মালবাহী কার্গো বিমানও ব্যবহার করা হয়। আর এগুলো সুইজারল্যান্ডের তৈরি বলে জানা যায়।
পত্রিকাটি জানিয়েছে, আফ্রিকায় গোপন গোয়েন্দা ঘাঁটিগুলোর মধ্যে পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম অধ্যুষিত বারকিনা ফাসোর রাজধানী ওয়াগাদুগুতেও রয়েছে। এখানে বিচ্ছিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ঘাঁটি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে বারকিনা ফাসোতে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন করলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিবরিল বাসোল জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ওয়াশিংটন পোস্টের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৬ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১২
সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুমে এডিটর