চীনের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুই দিনের আলোচনার পর রোববার (১১ মে) চুক্তিটি হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য আলোচনায় আমরা যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছি। এ বিষয়ে সোমবার আরও বিস্তারিত ঘোষণা করা হবে।
বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লাইফেং বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে বিশদ ও ‘খোলামেলা আলাপচারিতা হয়েছে। বেইজিংয়ের প্রধান আলোচক বলেছেন, উভয় পক্ষ তাদের মতপার্থক্য নিরসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে এবং একটি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য পরামর্শ ব্যবস্থায় সম্মত হয়েছে।
ক্ষমতা গ্রহণ করেই চীনা পণ্যে একের পর এক শুল্ক দিয়ে যাচ্ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার বিপরীতে বেইজিংয়ের নানান পদক্ষেপ বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে ওলট-পালট করে দেওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি করেছিল।
এই পরিস্থিতিতে বেসেন্ট ও লাইফেংয়ের নেতৃত্বে দুই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুইদিনের রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন।
উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে সুর অবশ্য অনেক আগেই নরম করেছিলেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে তিনি বলেছিলেন যে, চীনের পর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে প্রায় ৮০ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বিবেচনা করতে প্রস্তুত তিনি। তার এই বক্তব্যের পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতি চাঙা হতে থাকে।
কি চুক্তি হয়ে না জানালেও এ বিষয়ে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন এবং শুল্ক আরোপ করেছিলেন। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, চীনা অংশীদারদের সঙ্গে আমরা যে চুক্তি করেছি তা সেই জাতীয় জরুরি অবস্থা সমাধানের দিকে কাজ করতে আমাদের সাহায্য করবে।
জেমিসন গ্রিয়ারের এমন বক্তব্য দুই দেশের পণ্যে শুল্ক কমানো ইঙ্গিত বহন করে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব বাণিজ্য নিয়ে খোঁজখবর রাখা এক বিশেষজ্ঞ। বিবিসির বিজনেস টুডে অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, সোমবার দুই দেশই একে অপরের পণ্যে শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিতে পারে বলে আন্দাজ করছি।
একই আন্দাজ মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক সাবেক আন্ডারসেক্রেটারি ফ্র্যাঙ্ক লেভিনের। তিনি বলেছেন, দুই দেশ শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিতে পারে বলে আশা করছি। এরপরও তা ‘অতীতের তুলনায় বেশিই থাকবে’।
তবে এতটাও আশাবাদী নন হাইনরিচ ফাউন্ডেশনের বাণিজ্য নীতির প্রধান ডেবোরাহ এলমস। বিবিসির নিউজডে অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, আমার মনে হয়, খুব বেশি হলে দুই দেশ নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছেছে।
এদিকে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বা অগ্রগতি কতদূর তা অস্পষ্ট হলেও আলোচনায় খবরেই সোমবার সকালে চীন ও হংকংয়ের শেয়ার বাজারে চাঙ্গাভাব দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। চীনের মুদ্রা ইউয়ানকেও মার্কিন ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী দেখা যাচ্ছে।
সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ
এসএএইচ