ত্রিপলি: লিবিয়ার প্রবীণ নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি তার দেশের গোয়েন্দা বাহিনীর হাতে আটক ২০ সাংবাদিককে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। গাদ্দাফির সংস্কারবাদী ছেলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এসব সাংবাদিককে মূলত রক্ষণশীলদের প্রতিক্রিয়ার মুখে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
টেলিভিশনে বলা হয়, ‘সোমবার মুয়াম্মার গাদ্দাফি সব সাংবাদিককে ছেড়ে দেওয়া ও এ ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেন। ’
দ্য ওয়েয়া নামের একটি সাপ্তাহিক ও দ্য লিবিয়াপ্রেস বার্তাসংস্থার সাংবাদিকদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা আটক করে। এদের মধ্যে তিনজন তিউনিশিয়ার ও দু’জন মিসরের নাগরিক বলে সোমবার জানানো হয় ।
আল-গাদ প্রকাশনা সংস্থার অধীন দুটি সংস্থাই গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-আসলাম গাদ্দাফির অর্থায়নে পরিচালিত হয়।
এর আগে একে ‘লজ্জাকর ও কলঙ্কজনক’ বলে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আটক কর্মীদের তাৎক্ষণিক মুক্তির দাবি জানায় লিবিয়াপ্রেস।
রাষ্ট্রীয় প্রকাশনা সংস্থা রোববার সাবাহ ওয়ায়ে (মর্নিং ওয়ে) নামের একই মাস্টহেড ও সম্পাদকের নাম দিয়ে সংবাদপত্র প্রকাশ করে। এর পরই মূল ওয়ে সংবাদপত্রের প্রকাশনা বাতিল করা হয় বলে আল-গাদ জানায়।
তবে মূল সংবাদপত্রের সঙ্গে সরকারের জাল পত্রিকার কোনো সংযোগ নেই বলে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে। একইসঙ্গে লিবিয়ার গণমাধ্যমের ইতিহাসে এটি এমন প্রথম ঘটনা বলেও এর নিন্দা জানানো হয়।
১৯৬৯ সালের বিপ্লবের সঙ্গে জড়িত কিছু নেতাকে সরকারে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে ওয়ায়েতে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে গ্রেপ্তারের এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে আল-গাদ ধারণা করছে।
উল্লেখ্য, ওই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গাদ্দাফি ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু এর পর থেকে ওই নেতাদের সরকারি কার্যক্রম থেকে সবসময় দূরে সরিয়ে রাখা হয়।
আব্দেলসালেম জালোউদ-এর মতো নেতাদের ফিরিয়ে আনলে তা অনিয়ন্ত্রিত দুনীর্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে বলে সম্পাদকীয়তে লেখা হয়। আব্দেলসালেম বর্তমানে কোনো সরকারি দায়িত্বে নেই।
এদিকে, ১৯৮০ সালের দাপুটে নেতা আহমেদ ইব্রাহিম রাজনৈতিক নির্বাসনের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করতে যাচ্ছেন বলে বৃহস্পতিবার দিনশেষে লিবিয়াপ্রেস সংবাদ প্রকাশ করে।
আল-গাদের শিরোনামে ২০০৭ সালের আগস্ট থেকে ওয়ায়ে ও এর সহযোগি কুরইনা প্রথম প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই সংবাদপত্রগুলো দুর্নীতি, মানবাধিকার এবং মুসলিম-বিরোধী অবস্থান নিয়ে স্পর্শকাতর সংবাদ প্রকাশ করে আসছে।
গত বছরের জুনে প্রতিষ্ঠানটি আল-লিবিয়া নামের তাদের টেলিভিশন চ্যানেলটির মালিকানা হারায়। একইসঙ্গে অর্থাভাবে দৈনিক থেকে সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশনা শুরু করে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১০