জেনেভা: মহাবিশ্ব সৃষ্টির কারণ সম্পর্কে জানতে পদার্থবিজ্ঞানীরা আরও একধাপ এগিয়ে গেছেন। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পরমাণু বিস্ফোরণক্ষম স্থানে তারা সফলভাবে ‘মহাবিস্ফোরণ’ ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন।
এই গবেষণার তত্ত্বাবধানকারী প্রতিষ্ঠান ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউকিয়ার রিসার্চ বা সার্ন সোমবার একটি বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
২০১০ সালে সার্নের সুইজারল্যান্ডের লার্জ হ্যাড্রন কলাইডারে (এলএইচসি) বেশ কয়েকটি পরীক্ষা চালানো হয়। গত বৃহস্পতিবার সফল সমাপ্তির মাধ্যমে পরীক্ষাটির একটি নতুন দশায় উত্তরণ ঘটে।
আশা করা হচ্ছে, বিজ্ঞানীরা এলএইচসিতে সীসার আয়নের পারস্পরিক সংঘর্ষ নিয়ে পরীক্ষা করবেন। এ থেকে কোয়ার্ক (ক্ষুদ্র কণা) থেকে প্রোটন বা নিউট্রনের মতো বৃহৎ কণায় রূপান্তরের পেছনে নিহিত ‘শক্তিশালী বল’-এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তারা জানতে পারবেন।
সার্নের কর্মকর্তাদের মতে, এই পরীক্ষার সময় সূর্যের কেন্দ্রের তাপমাত্রার চেয়েও কয়েক লাখ গুণ বেশি তাপমাত্রা বেড়ে যায়। যা মহাবিশ্বের জন্মলগ্নে পদার্থের যে অবস্থা ছিলো বিজ্ঞানীদের তা নিয়ে গবেষণা করতে সহায়তা করবে।
এই পরীক্ষার মুখপাত্র ইয়ৃর্গেন শুক্রাফট কিছুদিন আগে বলেছিলেন, ‘প্রচণ্ড আয়ন’ সংঘর্ষের এই পরীক্ষার মাধ্যমে অত্যন্ত উত্তপ্ত ও ঘন পদার্থের ওপর ল্যাবরেটরিতে গবেষণা চালানো যায়।
ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ড সীমান্ত অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০০ মিটার নিচে এলএইচসি রয়েছে। বৃত্তাকার ওই স্থানটির পরিধি ১০০ কিলোমিটার। প্রায় আলোর গতিতে চলা অতিপরমাণু সদৃশ ক্ষুদ্র কণার দৃশ্য ধারণ করা যায় এখানে। শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্রের মাধ্যমে এসব কণাকে এই গতি দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক এলএইচসি প্রকল্পের ব্যয় ৫৬০ কোটি মার্কিন ডলার। এতে ৩৪ দেশের কয়েকশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই হাজার পদার্থবিজ্ঞানী অংশ নিয়েছেন। প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে ১৯৮৪ সালে।
উল্লেখ্য, এর আগেও সার্নের তত্ত্বাবধানে এ ধরনেরই কয়েকটি পরীক্ষা চালানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১০