ইয়াঙ্গুন: মিয়ানমারের গণতন্ত্রের প্রতীক শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সুচিকে ২১ বছরের মধ্যে ১৫ বছরই নানা অজুহাতে দেশটির জান্তা সরকার গৃহবন্দী করে রেখেছে। শনিবার তার বন্দীত্বের মেয়াদ শেষ হচ্ছে এবং খুব শিগগিরই তাকে মুক্ত করে দেওয়া হবে।
সুচির ১৫ বছরের বন্দী জীবন:
১৯৮৯ থেকে ১৯৯৫:
ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নেতা সুচিকে প্রথম ১৯৮৯ সালের জুলাই মাসে জান্তা সরকার বিরোধী আন্দোলনের জন্য গৃহবন্দী করে।
১৯৯০ সালে সুচির বন্দী অবস্থায়ই জান্তা সরকার সাধারণ নির্বাচন দেয়। নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করার পর ও তার দলকে সরকার গঠন করতে দেয়নি সামরিক সরকার।
এর এক বছর পর সুচিকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তার ওই পুরস্কার তিনি গ্রহণ করতে পারেননি। তার ছেলে ওই পুরস্কার গ্রহণ করেন।
দীর্ঘ ছয় বছর পর ১৯৯৫ সালের জুলাই মাসে তাকে মুক্তি দেয় সামরিক সরকার।
২০০০ থেকে ২০০৯:
দলের সভায় যোগ দিতে রাজধানী ইয়াঙ্গুন ত্যাগের চেষ্টা করায় সুচিকে দ্বিতীয় বারের মতো ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গৃহবন্দী করা হয়।
সুচিকে ২০০২ সালের মে মাসে মুক্তি দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই সংবাদ প্রকাশের সুযোগ পায়।
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার সময় ২০০৩ সালে সুচির গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়। তার জনপ্রিয়তার জন্য তাকে হত্য করার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে তার দল ধারণা করে। ওই হামলায় ৪ জন নিহত হয় বলে জান্তা সরকার জানালেও এনএলডি থেকে দাবি করা হয় নিহতের সংখ্যা ১০০।
২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে সুচিকে তৃতীয় বারের মতো গৃহবন্দী করা হয়।
২০০৯ সালে সুচির বন্দীত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে তার বাড়িতে একজন মার্কিন নাগরিক প্রবেশ করায় আরও ১৮ মাসের জন্য বন্দী করে রাখে জান্তা সরকার।
২০ বছর পর মিয়ানমারে গত ৭ নভেম্বর সাধারন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের সুচির দল (এনএলডি) অংশ নিতে পারেনি। দলটির নিবন্ধন বাতিল করা হয়।
সুচির বহু সমর্থক এরই মধ্যে তার ইয়াঙ্গুনের বাড়ির সামনে জমায়েত হয়েছে। আশা করা হচ্ছে যে কোনো সময়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১২১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১০