আগরতলা (ত্রিপুরা): গণদূত পত্রিকা দফতরে তিন খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। অভিযোগপত্রে সুশীল চৌধুরীর বিরুদ্ধে ছয়টি ধারা দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগপত্র জমাদানের পর পুলিশ আদালতে আবেদন জানিয়েছে যাতে সুশীল চৌধুরীকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রেখেই বিচার প্রক্রিয়া চালানো হয়।
গত মে মাসের ১৯ তারিখ ত্রিপুরার দৈনিক গণদূত পত্রিকা দফতরে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। সে হামলায় তিন জন নিহত হয়। হামলার তিন সপ্তাহ পর পুলিশ পত্রিকার মালিক ও সম্পাদক সুশীল চৌধুরীকে গ্রেফতার করে।
হামলার ৬৮ দিনের মাথায় এবং সুশীল চৌধুরীকে গ্রেফতারের ৪৯ দিনের মাথায় পুলিশ এ অভিযোগপত্র জমা দিল।
গণদূত দফতরে এ হামলা অপরাধ বিষয়ে আগরতলায় এখন পর্যন্ত সংঘটিত সবচেয়ে আলোচিত ও আলোড়িত ঘটনা।
পুলিশ অভিযোগপত্রে সুশীল চৌধুরীর বিরুদ্ধে খুন, সংঘবদ্ধ আক্রমণ, ষড়যন্ত্র, মিথ্যা সাক্ষী দেয়া, মিথ্যা সাক্ষী দিতে বাধ্য করা, হুমকি দিয়ে মিথ্যা বলানো ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এনেছে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ৩৪, ১২০(বি), ১৯৪, ১৯৫(এ), ২০১ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সুশীল চৌধুরী প্রকাশিত ও সম্পাদিত গণদূত পত্রিকা দফতরে ১৯ মে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তাদের আক্রমণে পত্রিকা দফতরের তিন জন নিহত হয়। নিহতেরা হলেন- গাড়িচালক বলরাম ঘোষ, প্রুফ রিডার সুজিত ভট্টাচার্য, এবং ম্যানেজার রঞ্জিত চৌধুরী। মাংস কাটার ছুরি দিয়ে তাদের উপর আক্রমণ করা হয়। তাদের কণ্ঠনালী, পেট চিরে দেয় আততায়ীরা। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু ঘটে।
ঘটনার ২১ দিনের মাথায় সুশীল চৌধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের আগে পত্রিকা দফতরের নিয়তি ঘোষ নামে এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। নিয়তি ঘোষের জবানবন্দী নিয়েই সুশীল চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গেছে।
এরপর প্রায় দুই মাস কেটে গেছে। মূল অভিযুক্ত সুশীল চৌধুরীকে গ্রেফতারের পর জামিনের আবেদনে কয়েকবার নিম্ন আদালতে তোলা হয়েছিল।
কিন্তু প্রতিবারই সে আবেদন নাকচ করে দেয়া হয়। গত শুক্রবার সুশীল চৌধুরীর আইনজীবী পীযূষ বিশ্বাস হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা দুপক্ষের সওয়াল জবাবের পর বিচারপতি শুভাশিস তলাপাত্র জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন।
সুশীল চৌধুরী এখন আগরতলা সেন্ট্রাল জেলে বন্দী। তাকে জেলে রেখেই বিচার প্রক্রিয়া চালানোর আবেদন করেছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৩
সম্পাদনা: কামরুল হাসান কাইউম, নিউজরুম এডিটর-eic@banglanews24.com