নয়াদিল্লি: ভারতের আইনজীবীদের সমালোচনা করেছে অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মাওবাদী বিদ্রোহীদের সহায়তা করার অভিযোগে ভারতের এক চিকিৎসকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়ায় শনিবার আইনজীবীদের সমালোচনা করে সংস্থাটি।
একইসঙ্গে এ সিদ্ধান্তের ফলে বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টি হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে এ সংস্থা।
দেশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার অভিযোগে বিনায়েক সেন নামের এই চিকিৎসককে ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় স্থানীয় আদালত ।
অ্যামেনেস্টি বিনায়েককে ‘বিবেকহীনতার কয়েদী’ হিসেবে উল্লেখ করে বলে, ‘তাকে যে আইনের ভিত্তিতে সাজা দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে অস্পষ্ট’ বলে উল্লেখ করে।
আ্যমেনেস্টির এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান স্যাম জারিফি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সেনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া আর্ন্তজাতিক স্বচ্ছ বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার। একইসঙ্গে এর ফলে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়বে। এছাড়া দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জন্য শান্তির পরিবেশ তৈরি করা মানবাধিকারকর্মীদের জন্যও তা হুমকীর পরিবেশ সৃষ্টি করবে। ’
এদিকে বিচারের আগে সেন কারাগারে থাকাবস্থায় ২২ জন নোবেল বিজয়ী তার মুক্তির দাবি জানিয়ে নয়াদিল্লিতে একটি চিঠি পাঠায়।
বিচার কাজ চলাকালে ছত্রিশগড়ে মাওবাদীদের শহর কেন্দ্রিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলায় সেন সাহায্য করেন বলে বিচারকরা অভিযোগ করেন। তবে বরাবরই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন মানবাধিকারকর্মী সেন।
উল্লেখ্য, অশান্ত ছত্তিশগড়ে একটি স্বাস্থ্য কিনিক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করেন সেন।
এদিকে ১৯৬৭ সাল থেকে ভারতের ২৯টি রাজ্যের ১৫টিতে মাওবাদী বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এই বিদ্রোহের মাধ্যমে সহিংসতা শুরু হয়।
এই সহিংসতায় ২০১০ সালের প্রথম ১০ মাসে ৫৭৭ জন বেসামরিক ব্যক্তিসহ প্রায় এক হাজার জন নিহত হন।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এই সহিংসতাকে দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হুমকী বলে অভিহিত করেছেন।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, ২৫ ডিসেম্বর ২০১০