জেরুজালেম: ইসরায়েলের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোশে কাতসাভকে ধর্ষক সাব্যস্ত করে রায় দিয়েছে সে দেশের এক আদালত। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এ রায়টি বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়।
বিচারকরা তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের স্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছেন।
এ ঐতিহাসিক রায়কে স্বাগত জানিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও মোশের উত্তরসূরী শিমন পেরেস বলেন, ‘ইসরায়েলে দুই রাষ্ট্রের কোনও স্থান নেই, রাষ্ট্র একটিই। এ রাষ্ট্রে দুই শ্রেণীর নাগরিক নেই। এক শ্রেণীর নাগরিকই বিদ্যমান এবং এরা সবাই আইনের চোখে সমান। ’
রাষ্ট্রপ্রধান থাকার সময়ই কাতসভের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে।
হারেৎস পত্রিকার আইনি বিষয়ক ধারাভাষ্যকার ও তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক জিভ সেগাল লিখেন, ‘এ ধরনের কাজে এর আগে গণতান্ত্রিক বিশ্বের কোনও প্রেসিডেন্ট দোষী সাব্যস্ত হননি। ’
তেল আবিবের জেলা আদালতের তিন সদস্য বিশিষ্ট বিচারক প্যানেল কাতসাভকে দোষী সাব্যস্ত করেন। ১৯৯৮ সালে পর্যটনমন্ত্রী থাকার সময় কাতসভ তার নারী সহকর্মীকে দু’বার ধর্ষণ করেন বলে প্রমাণ পান তারা।
এরপর প্রেসিডেন্ট থাকার সময় কাতসভ তার অন্য দুই নারী সহকর্মীর সঙ্গে অভব্য আচরণ ও যৌন হয়রানি করেন বলেও প্রমাণ মেলে।
উল্লেখ্য, কাতসভ ২০০০ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তবে কাতসভ বরাবরই কোনও অনৈতিক কাজ করার কথা অস্বীকার করে আসছেন। তার আইনজীবীরাও বলছেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন কাতসভ।
যদিও বৃহস্পতিবারের রায়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে কাতসভকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সরকারি কৌঁসুলি রনিত এমিল এ মামলাকে বর্ণনা করেছেন, ‘মারাত্মক ও চূড়ান্ত অসততার’ নজির হিসেবে।
এদিকে পাঁশুটে মুখে আদালত ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় রায় সম্পর্কে কোনও মন্তব্যই করেননি কাতসাভ। যদিও তার ছেলে বোজ বলেছেন, পরিবারকে পাশেই পাচ্ছেন কাতসাভ। সেইসঙ্গে তারা এখনও বিশ্বাস করেন, তার বাবা নির্দোষ।
আশা করা হচ্ছে, জানুয়ারিতেই শাস্তি নির্ধারিত হবে। ইসরায়েলে ধর্ষণের শাস্তি সর্বনিম্ন ৪ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১৬ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড।
২৯ পৃষ্ঠার ওই রায়ে ধর্ষণের শিকার নারীর উদ্ধৃতিও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে তিনি বলেন, কাতসাভের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তিনি পারছিলেন না। কাতসভ তার অফিসের ভেতরেই তাকে নগ্ন করার চেষ্টা করেন এবং এক সময় তিনি নিজেকে মেঝেতে আবিষ্কার করেন।
তিনি এ সময় বলেন, ‘আমি সব সময়ই ধস্তাধস্তি করতে থাকি এবং আমি তাকে বলি, যথেষ্ট হয়েছে, আমি এটা চাই না। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বও ৩১, ২০১০