ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

থাইল্যান্ডে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী

আত্মপরিচয় সন্ধানে দেশহীন মানুষেরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১১

থাইল্যান্ড: থাইল্যান্ডে জন্ম নিয়েও সেদেশের নাগরিক নয় এমন মানুষের সংখ্যা কয়েক লাখ। নাগরিকত্ব পেতে রীতিমতো হন্যে হয়ে ঘুরছেন তারা।



অবশ্য সম্প্রতি সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছে। থাইল্যান্ডের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকায় জন্ম নেয়া এসব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রয়োজনীয় দলিল প্রমাণ না থাকায় তারা রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা থেকে  বঞ্চিত হচ্ছেন। এদের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশের নাগরিকত্ব না থাকায় ভূমিতে কোনো মালিকানা নেই, ভোটাধিকার নেই, নিদিষ্ট চাকরি নেই এবং রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির স্বাস্থ্য সেবাখাতের সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। এমন কি বিনা অনুমতিতে তারা গ্রাম ছেড়ে যেতেও পারেন না।

অধিকার আদায়ে সম্প্রতি একদল লোক থাই পার্লামেন্টের শরণাপন্ন হয়। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তারা প্রমাণ দেখান যে তাদের পিতা-মাতা থাই নাগরিক। এরপর অবশ্য তারা নাগরিকত্বের সনদ পেয়েছেন।

সরকার এ সিদ্ধান্ত এক মায়ের জন্য একই সঙ্গে তিক্ততা ও মধুরতা উভয় বয়ে এনেছে। থাই আদিবাসী আদিসাক লারচুমের মা ৪৫ বছর ধরে এ দিনটির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার জন্য সরকারি ভর্তুকির স্বাস্থ্য খাতের সুবিধা তার জন্য খুব জরুরি ছিল। কিন্তু আজ অনেক দেরি হয়ে গেছে। ছেলের পা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কেটে ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না।

লারচুম জানান, গত ১০ বছর ধরে সে ক্যান্সারে ভুগছে। উন্নত চিকিৎসা-ব্যয় বহন করার সামর্থ্য তার নেই। গোটা পায়ে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ায় শেষ পর্যন্ত পা টা কেটেই ফেলতে হলো।

বাবা-মা লারচুনের জন্মনিবন্ধন করতে না পারায় লারচুন দেশহীন-পরিচয়হীন এক মানুষ ছিলেন।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসাব অনুযায়ী ৩ লাখ থাই ক্ষুদ্রজাতি গোষ্ঠীর মানুষের অবস্থা লারচুনের।

অবশ্য, ডিএনএ পরীক্ষায় সহায়তাদানে গঠিত কমিটির প্রধান সিনেটর তুয়াং উনতাচাইয়ের দাবি, থাইল্যান্ডে মাত্র এক লাখ লোক আছে যাদের থাই নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, বাকি যারা আছেন তাদের সবাই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে আসা অভিবাসী যারা থাইল্যান্ডের সামাজিক সেবা খাতের সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করে।

তিনি আরও বলেন, এদের মধ্যে কিছু অবৈধ অনুপ্রবেশকারীও আছেন যারা কাজের সন্ধানে থাইল্যান্ডে আসেন কিন্তু কোনো কাজ করেন না।   প্রকৃতপক্ষে পাহাড়ি এলাকার অনেক উপজাতি প্রতিবেশী মিয়ানমারের সহিংসতা এবং দারিদ্র্য থেকে বাঁচতে এখানে এসেছে। তারা নিজেদেরকে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবেও প্রমাণ করতে পারে না। আর অনেক প্রজন্ম ধরে থাইল্যান্ডে বসবাস করে কিন্তু জন্মনিবন্ধন না থাকায় অনেক পরিবার নাগরিকত্ব পায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।