ঢাকা: আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে আলোচনায় বসতে শনিবার সকালে কাবুলে পৌঁছেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
ওয়াশিংটন-কাবুল চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছর দেশটি থেকে ন্যাটো সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে।
তবে, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে দু’দেশের ঐক্যবদ্ধ লড়াইসহ কাবুল-ইসলামাবাদ সম্পর্ক আরও দৃঢ়করণে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
পাকিস্তানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এজাজ আহমদ চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তালেবানের সঙ্গে সরাসরি বা তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় শান্তি প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে দুই নেতা আলোচনা করবেন।
আফগান কর্মকর্তারা মনে করেন, পাকিস্তানি ভূখণ্ডের ভেতরে গোপন ঘাঁটি থেকে আফগানিস্তান ও এ অঞ্চলে হামলা চালিয়ে থাকে তালেবানরা।
যদিও ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করা হয়, আফগান তালেবানরা যে পাকিস্তানে হামলায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করে থাকে সে ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও গোপন তথ্য রয়েছে।
অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পরও দু’পক্ষই চায় তালেবানকে প্রকাশ্য রাজনৈতিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে। এ লক্ষ্যেই কারজাই বলে আসছেন, তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা কার্যকর করতে ইসলামাবাদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করুক।
গত জুনে কাতারে তালেবানরা একটি কার্যালয় খুললে আফগান প্রেসিডেন্ট তাদের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন।
একইসঙ্গে শান্তি আলোচনার পথ সুগম করতে পাকিস্তানের কারাগারে আটক তালেবানের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান কারজাই।
কাবুলের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে তালেবানের সামরিক শাখার কমান্ডার মোল্লা আবদুল গনি বারাদারসহ বেশ কিছু তালেবান নেতা-কর্মীকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান।
এতো আগ্রহ প্রদর্শন ও ছাড় দেওয়ার পরও কারজাইকে ওয়াশিংটনের নাচের পুতুল আখ্যা দিয়ে তার সঙ্গে বা দেশটির সর্বোচ্চ শান্তি পরিষদের সঙ্গে কোনো ধরনের শান্তি আলোচনার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় তালেবানরা।
তারপরও অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নওয়াজ ও কারজাই। দু’দেশেরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা করছে দুই নেতার মধ্যে শনিবারের এই আলোচনা খুব ফলপ্রসূ হবে।
গত মে মাসে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর নওয়াজ শরিফ এই প্রথম কাবুল সফর করলেও তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসা নিয়ে আলোচনা করতেই গত আগস্টে ইসলামাবাদ সফর করেন কারজাই। এছাড়া, গত মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের মধ্যস্থতায় লন্ডনে এ বিষয়ে চতুর্থ ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করেন ইসলামাবাদ ও কাবুলের দুই নেতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৩