ঢাকা: থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে আন্দোলনকারীকের রোষ থেকে সরকারি ভবনগুলোকে বাঁচাতে সেনা মোতায়েন করেছে থাই সরকার। সেনাবাহিনী এ কাজে দাঙ্গা পুলিশকে সহায়তা করবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীরা সরকারি ভবনগুলোর বাইরের প্রতিরক্ষা বেষ্টনী ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
এর আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা জানিয়েছিলেন, আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে সরকার অল্প পরিমাণ বলপ্রয়োগ করতে পারে।
বিক্ষোভকারীওরা প্রধানমন্ত্রী ইংলাকের প্রধান কার্যালয়সহ প্রধান সরকারি ভবনগুলোতে প্রবেশের হুমকির মুখে সেনা মোতায়েন করল সরকার। এদিকে, শনিবার সরকারবিরোধী ও সরকার সমর্থক দুই দলের সংঘর্ষে দু’জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকেই।
রোববার ইংলাকের পদচ্যুতি ঘটাতে আট দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে। আন্দোলনকারীরা সরকারকে অকেজো করার মাধ্যমে পিপলস কাউন্সিল গঠনের লক্ষ্য নিয়ে আন্দোলন করছে। তার এ আন্দোলনকে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন বলে ঘোষণা করেছে।
ব্যাংককে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদক জোনাহ ফিশার জানিয়েছেন, সরকারবিরোধীরা কয়েকটি টেলিভিশন স্টেশনে প্রবেশ করে অনুষ্ঠান প্রদর্শনের ব্যাপারটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। ফিশার থাইল্যান্ডের বর্তমান অবস্থাকে অভ্যুত্থান পূর্ব্বর্তী অবস্থা বলে মনে করছেন।
সংবাদমাধ্যম ব্যাংকক পোস্ট জানিয়েছে, সরকারবিরোধীদের একটি দল সম্প্রচার মাধ্যম পিবিএস টেলিভিশনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।
রোববার সকালে সরকার সমর্থক ‘রেড শার্ট’ নেতৃবৃন্দ বলেন, আন্দোলনকারীদের দমনে পুলিশকে সহায়তা করতে সেনাবাহিনী যুক্ত করার জন্য তারা ব্যাংকক স্টেডিয়ামে তাদের গণসমাবেশ শেষ করেছেন।
ইংলাকের সরকার ২০১০ সাল থেকেই গণ-আন্দোলনের সম্মুখীন হয়ে আসছে। সরকারের পতনের ডাক দিয়ে গত রোববার থাইল্যান্ডে আন্দোলন শুরু হয়। দ্বিতীয় দিন বিক্ষোভকারীরা দেশটির রাজধানীতে অবস্থতি অর্থ মন্ত্রণালয় ভবন এলাকায় অবস্থান নেয়। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা পর্যটন, পরিবহন ও কৃষি মন্ত্রণালয় ঘিরে ফেলে। ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনজীবী সুথেপ থাউগসুবানের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভকারীরা সারারাত ধরে অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাইরে শিবির গেড়ে অবস্থান নেয়।
গত মাসে থাকসিনকে সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার জন্য পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে একটি বিল পাসের পর থেকেই সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। অবশেষে বিরোধিতার মুখে উচ্চকক্ষে বিলটি প্রত্যাখ্যাত হয়। ওই বিলে ২০১০ সালে ‘রের্ড শার্টের’ সমর্থকের ওপর সামরিক অভিযানে ৯০ জনের নিহতের ঘটনায় দায়ীদেরও সাধারণ ক্ষমার বিষয়টি ছিল।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, ইংলাক সিনাওয়াত্রার ওপর তার ভাই ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
২০০৬ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর স্বেচ্ছায় নির্বাসনে রয়েছেন থাকসিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৩