কলকাতা: অপরাধ না করেই এবার রাজ্যবাসিকে কারাগারে বেড়াতে যাবার ব্যবস্থা করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। অবাস্তব মনে হলে ঘটনাটা সত্যি।
ভারতে জেলের ভেতর ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ রয়েছে একমাত্র আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। উপমহাদেশের স্বাধীনতার জন্য যারা লড়াই করেছিলেন তাদের ব্রিটিশ সরকার দ্বীপান্তরে পাঠাতো। তাদের স্থান হতো আন্দামানের সেলুলার জেলে। কিন্তু এখন সেখানে কোনো বন্দি নেই। করা হয়েছে জাদুঘর।
রাজ্য সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে ভেতরে বন্দী থাকা অবস্থাতেই পর্যটকরা কারাগার ঘুরে দেখতে পারবেন। রাজ্য সরকার সূত্রে বৃহস্পতিবার জানা গেছে, ‘জেল ভ্রমণের পাইলট প্রজেক্ট রূপে আপাতত হুগলী জেলকেই ঠিক করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্বের কাজ শুরু হয়েছে। এর জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৪০ কোটি রুপি। ’
রাজ্য সরকার মনে করছে এর ফলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলির অভিযোগের জবাব দেওয়া যাবে। বন্দীদের কীভাবে রাখা হচ্ছে তা সাধারণ মানুষ দেখতে পাবে।
রাজ্যের আইজি (কারা) বি ডি শর্মা জানিয়েছেন, জেলে দীর্ঘ দিন বন্দী থাকার কারণে হতাশা তৈরি হয় বন্দীদের মনে। তাই জেলের প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও খোলামেলা পরিবশে তৈরির জন্য এই ব্যবস্থা প্রয়োজন।
হুগলি জেলকে প্রথমে ভাবার কারণ এখানে বন্দী ছিলেন বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম। এখানে তিনি তার বিখ্যাত লেখা ‘কারার এই লৌহ কপাট’ সহ বহু কবিতা ও গান লেখেন। তার কক্ষটি ইতিপূর্বেই সংরক্ষিত করা হয়েছে। এখানেই তিনি জেলের অত্যাচারের প্রতিবাদে অনশন করেছিলেন।
ছুটি ও অন্যান্য বিশেষ দিনে এই জেলের দরজা এবার খুলে যাবে পর্যটকদের জন্য। তারা জেলের একটি নির্দিষ্ট অংশ ঘুরে দেখবেন। তবে এখনই তারা বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। তবে তার ব্যবস্থাও হবে কিছুদিন পরে। কারা মন্ত্রক চাইছে বন্দিদের দিয়ে একটি ক্যাফেটেরিয়া শুরু করতে।
তবে এই প্রকল্পে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তার ব্যবস্থার ওপর। সব ঠিকঠাক চললে আগামী মার্চেই চালু করা হবে আমজনতার জন্য এই অভিনব জেল পর্যটন।
ভারতীয় সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১১