লন্ডন: অর্থনীতিতে ভারত ও চীনের বড় ধরনের অংশগ্রহণ সত্ত্বেও চলতি বছর প্রবৃদ্ধি হবে ধীরগতির। এই অনুমান করছে বিশ্বব্যাংক।
২০১০-এ বিশ্ব জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। আর ২০১১-এ তা কমে ৩ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসবে। তাই উত্থানশীল বাজারের প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ হলেও বেকারত্বের হার কমানোর জন্য তা যথেষ্ট নয়। বিশ্বব্যাংক সতর্ক করে, ভয়াবহ অস্থিরতা ও চোরাগর্তের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে অর্থনীতি।
এর মধ্যে ইউরোভিত্তিক অঞ্চলের ঋণ সংকট এবং কম মুনাফাভিত্তিক উন্নত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে বড় আকারের পুঁজির উচ্চ মুনাফার ক্ষেত্র উত্থানশীল বাজারের দিকে ধাবিত হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। একইসঙ্গে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথাও জানায় বিশ্বব্যাংক।
এ বছর চীনে প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭ এবং ভারতে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দেয়। এর বিপরীতে ধনী দেশগুলোর একত্রিত প্রবৃদ্ধি মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ হবে বলেও সংস্থাটি অনুমান।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংক বলে, ‘অর্থনৈতিক সংকট উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি পরীক্ষা হলে তারা খুব ভালোভাবেই এতে কৃতকার্য হয়েছে। ’ আর এর ফলেই উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর অব্যাহত সংকট সত্ত্বেও ২০১১ সালের বৈশ্বিক প্রবৃব্ধিতে গতি সঞ্চার হবে।
অন্যদিকে, উন্নত অর্থনীতির ব্যবস্থাল ভেতরে জাতীয় ঋণ, বেকারত্ব, দুর্বল ব্যাংকিং ব্যবস্থা এবং সরকারের উচ্চ ঋণের মতো সমস্যাগুলো দেখা দিবে। বিশেষত ইউরোপে।
বিশ্বব্যাংকের এ বিশ্লেষণ বুধবার বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রকাশিত ‘গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্ট’- এরই প্রতিফলন। এতে অর্থনৈতিক ভারসাম্যহীনতা, পণ্য সামগ্রীর মূল্য ও মুদ্রার ক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতা এবং সরকারের বাজেটের ঘাটতি বিষয়ে সতর্ক করা হয়। ডব্লিউইএফ এ বিষয়ে বলে, ‘বৈশ্বিক অর্থনীতি আবারও বড় ধরনের ঝুঁকিতে মধ্যে আছে। ’
বিশ্বব্যাংক একইসঙ্গে দ্রব্যসামগ্রী ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে। এ বিষয়ে সতর্ক করে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত বৃদ্ধি বজায় থাকলে সামর্থ্যহীনতা ও দারিদ্র আরও তীব্র হবে। ’
বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন বিষয়ক পরিচালক হ্যান্স টিমার বলেন, ‘খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সংকটের আগেই আমরা ২০০৮ সালের পরিস্থিতির সঙ্গে কিছু মিল দেখতে পাচ্ছি। ’
২০০৮ সালে খাদ্যমূল্যের ব্যাপক বৃদ্ধির কারণে বিশ্বের বেশ কিছু দেশে দাঙ্গা-সংঘাত দেখা দেয়।
তবে এ বছর খাদ্যের মজুদ তুলনামূলক বেশি হওয়ার কারণে পরিস্থিতি আগের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন বলেও টিমার আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১১