ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কূটনীতিকদের নজর এখন ৫ জানুয়ারিতে

জেসমিন পাপড়ি, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৪
কূটনীতিকদের নজর এখন ৫ জানুয়ারিতে

ঢাকা: দূতিয়ালির চেষ্টা আপাতত বন্ধ রাখছেন বিদেশি কূটনীতিকেরা। সব চেষ্টা থামিয়ে ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে নজর দিয়েছেন তারা।

এরপরেই নির্ধারণ করবেন পরবর্তী করণীয়।  
 
কূটনীতিক সূত্রে জানা গেছে, বহু চেষ্টার পর এ দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক জোটের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় খানিকটা হতাশ হলেও হাল ছাড়ছেন না বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। এবার নির্বাচন পরবতী সমঝোতার দিকে ঝুঁকতেই ৫ জানুয়ারির ওপর দৃষ্টি তাদের।

নির্বাচনসহ পরবতী সব পরিস্থিতি নজরে রাখতে এরইমধ্যে বাৎসরিক ও বড়দিনের ছুটি শেষ করে ঢাকায় ফিরেছেন এদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কুটনীতিকেরা। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির নিবিড় পর্যবেক্ষণ করেই তারা পদক্ষেপ নেবেন।

সম্প্রতি ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরে প্রধান দুই দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য নিয়েছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা। এরপর গত দুই দিন তাদের কার্যত তেমন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না।
 
অনেক দেশই বাংলাদেশের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দু’দলের সমঝোতার চেষ্টা করলেও শেষ মুহূর্তে নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছে, বাংলাদেশের এ নির্বাচন নিয়ে আগে ভাগেই তারা মন্তব্য করতে রাজি নয়।

কিছুদিন আগেও কুটনীতিকদের সক্রিয়তার কারণে নির্বাচন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। তবে সমঝোতার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দু’দল থেকে সমান সাড়া না পাওয়ায় সময় দ্রুত ফুরিয়ে যায়। আর এখন দশম নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়া বিকল্প কোনো উপায়ও দেখছেন না কূটনীতিকেরা।
 
নির্বাচনে প্রভাবশালী দেশগুলো থেকে পর্যবেক্ষক না আসলেও ঢাকাস্থ কূটনীতিকদের ওপর পরিস্থিতি গভীরভাবে নজর রাখার দায়িত্ব পড়েছে।

পশ্চিমা দেশের একটি দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, আপাতত নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া বিকল্প নেই। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দেশের পরিস্থিতি বুঝে তারা তাদের অবস্থান জানাতে পারেন।

এদিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমা ও ইউরোপের কূটনীতিকেরা সরব থাকলেও মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিকেরা ছিলেন একেবারেই নীরব। সৌদি আরব, কুয়েত, কাতারসহ আরো কয়েকটি শীর্ষ দেশ এ বিষয়ে কোনো আলোচনাতেই আসেনি।

জানা গেছে, বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ থাকায় রাজনৈতিক বিষয়ে আপাতত কোনো পক্ষকেই অতুষ্ট করতে চাইছে না মধ্যপ্রাচ্যের এসব দেশ। তাদের এ নীরবতাকে সমর্থন মনে করেছে সরকার।

বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে পশ্চিমা দেশগুলোর কুটনীতিকেরা সরকারের ওপর সমঝোতার চাপ প্রবল করতে পারে। এমন আশঙ্কা করেছে ভারতের একটি দৈনিক পত্রিকা।

ভারতের দৈনিকটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারকে চরম অসযোগিতা করবে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

তবে এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, আজকের এ সময়ে কূটনৈতিক অসহযোগিতা করা সম্ভব নয়। কারণ, বাংলাদেশ ছোট দেশ হলেও অনেক দেশের বহু অর্থ এখানে বিনিয়োগ করা আছে। সে বিষয়টি তাদের ভাবতে হবে। তাছাড়া বাংলাদেশে প্রধান দু’দলই ঘুরেফিরে ক্ষমতা বদল করবে এটাই এখন বাস্তবতা। কোনো চাপে ক্ষমতা বদল হলও এই ক্ষমতাসীনরা যখন আবার ক্ষমতায় আসবে তখনকার সময়ের কথা ভেবেই কোন দেশ বা সংস্থা এমন সিদ্ধান্তে যাবেনা।

দেশের এক কূটনীতিক বলেন, এই অঞ্চলে ভারতের মতামত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের এই নির্বাচন নিয়েও ভারতের মতামতই শেষ সিদ্ধান্ত। কোনো দেশই চাপ দিয়ে এর বাইরে নিয়ে যেতে পারবে না। আর তাই এই নির্বাচনের দিকেই আপাতত নজর দিতে হবে সকল কূটনীতিকদের।  

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।