তিউনিশ: তিউনিশিয়ায় শনিবার অন্তবর্তীকালীন সরকার হিসেবে শপথ নিয়েছেন সংসদের স্পীকার ফুয়েদ মেবাজা। এর মধ্য দিয়ে দেশটির উৎখাত হওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট জিন এল আবিদিন বেন আলি সম্পূর্ণভাবেই দৃষ্টির আড়ালে চলে গেলেন।
তিউনিশিয়ার সাংবিধানিক পরিষদ মেবাজাকে অস্থায়ী সরকার হিসেবে ঘোষণা করেন বলে সরকারী বার্তাসংস্থা টিএপি’র প্রকাশিত এক ইশতেহারে জানা যায়।
মূলত সংবিধানের ৫৭ ধারার ভিত্তিতে তিউনিশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ঘানাউচি’র অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে স্পীকারকে নিয়োগ দেয় এ পরিষদ। এর ভিত্তিতে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে নতুন সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সংসদে নিজের কার্যালয়ে মেবাজা অস্থায়ী সরকার হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। শপথ গ্রহণের পর শনিবার মেবাজা বলেন, ‘কোনো ধরনের ব্যতিক্রম ছাড়াই তিউনিশিয়ার সব জনগণ জাতীয় রাজনীতিতে অংশ নিতে পারবেন। ’
এর আগে শুক্রবার তিউনিশিয়া থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগের আগে একটি অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করে ঘানাউচির হাতে অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তর করেন বেন আলি।
তবে সংবিধানের ৫৬ ধারায় এখনও মনোনয়নের জন্য আবেদন করতে পারেন তিনি। তাই বেন আলির আবারও ফিরে আসার সুযোগ রয়েছে।
এদিকে আরও বিক্ষোভ, সহিংসতা ঠেকাতে তিউনিশির কেন্দ্রে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এসময় সেনা সদস্যসহ সাদা পোশাকের নিরাপত্তা বাহিনী ডজনেরও বেশি লুণ্ঠনকারীদের বন্দুকের মুখে ট্রাকে করে নিয়ে যায় বলে বার্তাসংস্থা এএফপির সাংবাদিকরা জানান।
মূলত তিউনিশ ও এর পাশ্ববর্তী এলাকায় রাতব্যাপী লুণ্ঠনের ঘটনার পর পরই দেশটির ক্ষমতায় রদবদল হয়।
ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক বিশ্ব এসময় তিউনিশিয়াকে শান্ত থাকাসহ উত্তর আফ্রিকার দেশটিকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তিউনিশিয়ার প্রতিবাদকারীদের ‘সাহস’ ও ‘মর্যাদা’র প্রশংসা করেন এবং ‘স্বাধীন ও স্বচ্ছ নির্বাচনে’র আহ্বান জানান।
আরব লীগ তিউনিশিয়ার রাজনৈতিক শক্তিকে একত্রিত হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়। এসময় তারা তিউনিশিয়ার এ ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেন।
তিউনিশিয়ার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা তিউনিশিয়ার এ ঘটনাকে ‘জেসমিন বিপ্লব’ নামে অভিহিত করেছেন।
তিউনিশিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসে প্রতিবাদের চাপে আরব বিশ্বের কোনো নেতার ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদের ঘটনা এটাই প্রথম।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১১