ঢাকা: লিবিয়ার সাবেক স্বৈরশাসক কর্নেল মুয়াম্মর গাদ্দাফির যৌনজীবন সম্পর্কে নানা অজানা তথ্য ফাঁস হতে শুরু করেছে। সম্প্রতি গাদ্দাফির গোঁপন যৌনকার্য সম্পর্কে বিবিসি এক ডকুমেন্টারি প্রকাশ করেছে।
আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ‘গাদ্দাফি’স সেক্রেট ওয়ার্ল্ড’ শিরোনামে ডকুমেন্টারিটি বিবিসি৪ অনুষ্ঠানে রাত দশটায় প্রচারিত হবে।
বিবিসির ওই ডকুমেন্টারিতে গাদ্দাফির ‘সেক্স চেম্বার’ এর সন্ধান পাওয়া গেছে। গাদ্দাফির রাজ প্রাসাদের মধ্যেই এটি ছিল। এটাকে বিবিসি নাম দিয়েছে ‘সেক্স ডেন’।
ডকুমেন্টারিতে বলা হয়, গাদ্দাফি বিভিন্ন স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কম বয়সী মেয়েদের বাছাই করতেন। নিজের পছন্দ মতো যাকে খুশি নিরাপত্তা প্রহরী দিয়ে ধরে নিয়ে যেতেন। প্রতিবাদ মানেই গুলি করে হত্যা। মাঝে মাঝে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেয়ে বাছাই করতেন। পরিবার বাধা দিলে সবাইকে হত্যা করতেন গাদ্দাফি।
আটকের পর মেয়েদের নিয়ে গিয়ে দিনের পর দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করতেন গাদ্দাফি। এমনকি তাদেরকে তিনি পর্নোগ্রাফি দেখতে বাধ্য করতেন। তার সেবাদানে নিয়োজিত ছিল ‘হারেম’ নামে একদল নারী। এদেরকেও তিনি যৌনকাজে ব্যবহার করতেন।
আরো আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে তিনি যে কক্ষে ধর্ষণ করতেন ওই কক্ষের সঙ্গেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য আরেকটি কক্ষ ছিল। ধর্ষণের পর মেয়েদের জোর করে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করতেন ওই কক্ষে নিয়ে গিয়ে। এমনকি ধর্ষণের আগে এসটিডির মতো কোনো রোগের ভাইরাস আছে কিনা তাও পরীক্ষা করা হত ওখানে।
গাদ্দাফি তার ৪২ বছর রাজত্বকালে বছরের পর বছর লিবীয় মেয়েদের ওপর এভাবে যৌন নির্যাতন চালাতেন।
এমনকি যারা কোনোমতো গাদ্দাফির হাত বেঁচে যেতেন তাদেরকে রক্ষণশীল মুসলিম পরিবার গ্রহণ করত না। ফলে অমানবিক এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হত হতো নির্যাতিত মেয়েদের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যিনি ডকুমেন্টারিটি তৈরি করেছেন তাকে গাদ্দাফির গোঁপন গুহায় পৌছাতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়। কারণ ওই স্থানটিকে লিবিয়ার বর্তমান সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
২০১১ সালে ২০ অক্টোবর গ্রেফতারের পর তাকে হত্যা করা হয়। গাদ্দাফি নিহতের পর এখনও অনেকে গাদ্দাফির নানা অপকর্ম সম্পর্কে মুখ খুলতে ভয় পান।
ত্রিপোলির এক শিক্ষক বলেন, গাদ্দাফি যেসব মেয়েদের ধরে নিয়ে যেতেন তাদের কারো কারো বয়স ১৪ এর নিচেও ছিল। একবার গাদ্দাফির বাহিনী ধরে নিয়ে গেলে তাকে আর ফিরে পাওয়া যেত না।
এক ‘টিনএজার’ মেয়ের মা বলেন, আমরা গাদ্দাফির আমলে সবসময় ভয়ে থাকতাম, কখন গাদ্দাফি আমাদের বাড়ি ভ্রমনে আসে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৪