ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনি বালিকার পাথুরে কান্না

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৪
ইয়েমেনি বালিকার পাথুরে কান্না

ঢাকা: দুঃখ-আবেগে মানুষ অশ্রু ঝরিয়ে কাঁদলেও, ইয়েমেনি এক বালিকা অশ্রুর পরিবর্তে চোখ থেকে পাথর ঝরিয়ে কাঁদছে। ৮ বছর বয়সী শিশুটির এমন ভয়ংকর অসুখ সারাতে বিশ্বের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তার বাবা মোহাম্মদ সালে আল জাহারানি।



দুবাইভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম গালফ নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, হোদেইদা প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের শিশুটির নাম সাদিয়া। গত ১৪ দিন ধরে তার চোখ গড়িয়ে অশ্রুর পরিবর্তে পাথর ঝরছে। এই অজ্ঞাত রোগ সারাতে নিজের অর্থ-বৈভবের সর্বস্ব বিলিয়ে দিচ্ছেন বাবা আল জাহারানি।

মেয়েটির বাবা আল জাহারানি বলেন, মেয়ের চিকিৎসা বাবদ দিনে ৫০ হাজার ইয়েমেনি রিয়ালও খরচ করতে হয়েছে আমাকে। স্থানীয় ‍অনেক ক্লিনিকে তার চোখের এক্স-রে করানো হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, তার চোখে বিশেষ কিছু ধরা পড়ছে না।

ইয়েমেনি টেলিভিশন চ্যানেল আজল টিভিতে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, কান্নার সময় ‍সাদিয়ার চোখ থেকে পাথরের মতো এক ধরনের ক্ষুদ্র নুড়ি ঝরছে। সে যতো জোরে কাঁদে ততবেশি পরিমাণ নুড়ি ঝরতে থাকে। তবে, ঘুমিয়ে গেলে পাথর ঝরা বন্ধ হয়ে যায়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিকেলে ও সন্ধ্যায় সাদিয়ার চোখ বেয়ে পাথরাশ্রু ঝরে। আবার পাথর বেরোনোর সময় মেয়েটি কোনো ধরনের আঘাতও পায় না। একারণে, সে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে।

দুই স্ত্রীর ঘরে ২০ সন্তানের জন্ম দেওয়া আল জাহারানি বলেন, তার মেয়ে সাদিয়ার চোখ দিয়ে দিনে অনেক সময় ১০০টিরও বেশি পাথর ঝরে। এই অস্বাভাবিকতায় অবশ্য তার অন্য কোনো সন্তান আক্রান্ত হয়নি।

সাদিয়ার রোগের ব্যাপারে স্থানীয় চিকিৎকদের বিশেষ কোনো মন্তব্য পাওয়া না গেলেও একজন চিকিৎসক একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মেয়েটির কান্নায় পাথুরাশ্রু ঝরার ঘটনার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাননি তিনি।

এছাড়া, উন্নয়নশীল ইয়েমেনের স্থানীয় চিকিৎসকরা প্রযুক্তির অভাবে চোখ থেকে ঝরা ওই পাথরগুলোও পরীক্ষা করে দেখেননি বলে জানান বেসরকারি টিভি চ্যানেলটির সংশ্লিষ্ট সাক্ষাৎকারের প্রযোজক আবদুল কারিম আল আয়াসি।

তবে পশ্চাৎপদ অঞ্চলটিতে সাদিয়ার গায়ে জিন-ভূতের আছর লেগেছে বলে তাকে ওঝাদের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

বিস্ময়ের ব্যাপার হলো একই প্রদেশে একবছর আগে এমন ঘটনা প্রথম ঘটেছিল। সেবার সাবুরা হাসান আল ফাজিয়া নামে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে বিয়ের পর জর্দানে নিয়ে গিয়ে চিকিৎস‍া করানোর পর সেরে ওঠেন সাবুরা।

সাদিয়ার বাবা আল জাহারানি আশা করছেন, বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে তিনিও মেয়েকে উন্নত চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।