ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জলবায়ু পরিবর্তনের নতুন তত্ত্ব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১১
জলবায়ু পরিবর্তনের নতুন তত্ত্ব

মস্কো: পরিবেশ বিপর্যয় ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ হিসেবে এতোদিন মূলত গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়ার কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়নকেই দায়ী করা হতো। কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আরো ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ আবিষ্কার করেছেন।

মানবসৃষ্ট কোন কারণ নয় এবার পৃথিবীর গাঠনিক ত্রুটির কারণেই সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হচ্ছে এমন তত্ত্ব খাড়া করেছেন তারা। সম্প্রতি নাসার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানা গেছে। খবর রুশ পত্রিকা প্রাভদা।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর চৌম্বক মেরুর ব্যাপক বিচ্যুতি এক দুর্বার শক্তি উৎপাদন করছে যা ২০১১ সালের শুরুর দিকে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ ঝড়ের সৃষ্টি করে। পৃথিবীতে  যে ধারাবাহিক ঝড় ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে তার পিছনে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। সর্বশেষ উত্তর আমেরিকায় যে ভয়াবহ তুষার ঝড় বয়ে গেল তাতে নতুন বরফ যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে এমন আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে।

২০১১ সালের শেষের দিকে যুক্তরাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝোড়ো হাওয়া, ক্রিসমাসের আগে যুক্তরাষ্ট্রের তুষার ঝড় ও ফেব্রুয়ারিতে আবারো ঝড়ের হানা, অস্ট্রেলিয়াতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বন্যা এবং বন্যা দুর্গত এলাকায় আবার ৫ এর বেশি মাত্রার হারিকেন নতুন বরফ যুগের সূচনার বার্তা বহন করে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৫০ মিলিয়ন মানুষ। এর ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ে প্রায় ২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে।

অস্ট্রেলিয়ায় অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় কুইন্সল্যান্ড এলাকার পানি এতোটাই বেড়ে গিয়েছিল যে রাস্তায় হাঙ্গর সাঁতার কাটতে দেখা গেছে। নিরূপায় কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছেন কিছু অঞ্চলের পানি কোন ভাবেই নিষ্কাশন করা সম্ভব নয়। বন্যা কবলিত অঞ্চলটি হয়ত ছোট খাটো সাগরে রূপান্তরিত হবে এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।

এরমধ্যে ঘুর্ণিঝড় ইয়াসি আঘাত হানে অস্ট্রেলিয়ায়। এর বাতাসের বেগ ছিল ঘণ্টায় ২০০ মাইল। যা ৫ মাত্রার হারিকেনের চাইতেও ২২ শতাংশ বেশি গতি সম্পন্ন।

জলবায়ু গবেষকদের দাবি, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের দ্রুত বিচ্যুতির দরুণ অদূর ভবিষ্যতে এমন ঝড় বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যার বাতাসের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৩০০ থেকে ৪০০ মাইল।

গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সুর্যের তড়িৎ চুম্বক ক্ষেত্র পৃথিবীর সঙ্গে যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করছে তার প্রভাব শুধু পৃথিবীর চৌম্বক বলয় নয় এর অক্ষের বিচ্যুতি, কোরের মধ্যকার গতিময়তা, সমুদ্র স্রোত এবং আবহাওয়ার ওপরও পড়ছে।

এর ফলে পৃথিবীর চৌম্বক কেন্দ্র গত ১০ বছরে প্রতিবছর ৪০ মাইল করে পূর্ব দিকে সরে যাচ্ছে। স্বাভাবিক অবস্থায় এর বিচ্যুতি  হয় গড়ে ৫ মাইল। আরো ভীতিকর বিষয় হচ্ছে এ বিচ্যুতির হার বেড়েই চলছে।

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তাদের এক গবেষণায় দেখায়, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে বড় ধরনের একটি সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে আয়নস্ফেয়ার এবং ট্রপোস্ফেয়ারে বায়ু প্রবাহ নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। মার্কিন কেন্দ্রীয় সংস্থা এসওএএ একই রকম তথ্য প্রকাশ করেছে। উপরন্তু তাদের ধারণা ভবিষ্যতে কালিফোর্নিয়ার বেশিরভাগ অংশ ঝড়ে উড়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০:২৫ ঘণ্টা ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১১
এমজেএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।