আহমেদাবাদ: ভারতের গুজরাট রাজ্যের গোধরা রেলস্টেশনে ২০০২ সালে ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগে ৩১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন ভারতের একটি বিশেষ আদালত। খবর এনডিটিভি ও এএফপির।
তাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গায় ষড়যন্ত্র ও হত্যাকাণ্ডের আনা হয়েছে। এ রায় ঘোষণার পর প্রধান বিরোধী দল বিজেপি স্বাগত জানিয়েছে।
গোধরা স্টেশনে ট্রেনে আগুন লাগার পর ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গায় ২০০০ লোক নিহত হয়েছেন। রাজ্যের হিন্দুদের অভিযোগ, মুসলিম বিক্ষোভকারীরা সবরমতি এক্সপেস নামের ওই ট্রেনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ট্রেনে ৫৯ জন কর সেবক (হিন্দু ধর্মীয় স্বেচ্ছাসেবক) নিহত হন, যারা অযোধ্যা থেকে ফিরছিলেন।
তবে মুসলমানরা তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে আসছে। অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রটেকশন অব সিভিল রাইটসের প্রেসিডেন্ট শাকিল আহমেদ বলেন, ‘এটা একটা দুর্ঘটনা ছিল এবং আমরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। ’
এ ব্যাপারে বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি জেএম পাঞ্চাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘ষড়যন্ত্র ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ৩১ জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। বাকি ৬৩ জন নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। ’ তিনি বলেন, আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি আসামীদের সাজা ঘোষণা করা হবে।
এর আগে একটি জাতীয় তদন্তে বলা হয়, ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা একটি দুর্ঘটনা মাত্র। অবশ্য অন্য কর্মকর্তাদের তদন্তে এর উল্টোচিত্র পাওয়া যায়। পাঞ্চাল বলেন, ‘আদালত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব মেনে নিয়েছেন। এটা কোনো দুর্ঘটনা ছিল না। ’
বিজেপি নেতা ও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ দাঙ্গায় উৎসাহ দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি পুলিশকে দাঙ্গায় হস্তক্ষেপ না করার আদেশ দিয়েছেন। এ সময় মোদি বিজ্ঞানী নিউটনের তৃতীয় সূত্র ‘প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন। এ থেকেই বোঝা যায় তিনি ওই দাঙ্গায় স্পষ্টতই মদদ দিয়েছেন।
দাঙ্গার সময় হিন্দুরা আহমেদাবাদ ও এর আশপাশে মুসলিম ঘরাবাড়ি ধ্বংস করেছে, মুসলিম নারীদের ধর্ষণ করেছে, লুণ্ঠন চালিয়েছে। প্রায় দুই লাখ মুসলমান বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই তাদের বাড়িতে আর কখনোই ফেরেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১১