ঢাকা: ইরাকি পার্লামেন্টের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পেলেন দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। একই সঙ্গে আল আবাদির প্রস্তাবিত মন্ত্রিসভাকেও অনুমোদন দিয়েছে পার্লামেন্ট।
নতুন প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভাকে পার্লামেন্টের এই অনুমোদন চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে ইরাকের বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে সোমবার পার্লামেন্টে প্রস্তাবিত মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্যকে অনুমোদন দেয়া হলেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর পরই ইরাকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই পদ দু’টির নাম ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাদি পার্লামেন্টের কাছে অতিরিক্ত এক সপ্তাহ সময় চেয়েছেন।
এদিকে সোমবার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে গোষ্ঠীগত সশস্ত্র গ্রুপ ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে নতুন প্রধানমন্ত্রী আল আবাদি বলেন,‘ পুরো ইরাকে সশস্ত্র গ্রুপ এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সামরিক অভিযান চলবে। ’ একই সঙ্গে কুর্দিদের সঙ্গে অমীমাংসিত ইস্যুগুলো সমাধানেরও অঙ্গীকার করেন তিনি।
‘উজিরে খামোখা’ নুরি আল মালিকি !
নতুন সরকারের সবচেয়ে তাৎপর্যপূণ বিষয় হলো কো ভাইস প্রেসিডেন্টের মত গুরুত্বহীন এবং প্রতীকী পদে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকীর নাম প্রস্তাব। এছাড়া প্রভাবশালী দুই রাজনীতিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী আয়াদ আলাবি এবং সাবেক স্পিকার ওসামা আল নুজায়ফিকেও দেয়া হয়েছে কো ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ।
তবে প্রতাপশালী বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি এ রকম তাৎপর্যহীন একটি পদ গ্রহণ করবেন কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়।
এদিকে তিন উপ-প্রধানমন্ত্রীর একজন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে কুর্দি রাজনীতিবিদ এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসায়ের জেবারির নাম। পররাষ্ট্র মন্ত্রী করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইবরাহী আল জাফারিকে।
নতুন সরকারে যোগ দেয়ার প্রশ্নে সিদ্ধান্তহীন কুর্দি ব্লক
এদিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী কুর্দিদের দিকে আন্তরিকতার হাত বাড়ালেও নতুন সরকারে যোগ দেয়ার ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় কুর্দি রাজনীতিকরা।
সোমবারও পার্লামেন্ট শুরুর আগে নতুন সরকারে যোগ দেয়ার প্রশ্নে নিজেদের মধ্যে ঘণ্টাখানেক বিতর্কে লিপ্ত হন কুর্দি পার্লামেন্ট সদস্যরা।
এমনকি অধিবেশনের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ফুয়াদ মাসুম ছাড়া আর কোনো কুর্দি রাজনীতিক উপস্থিত ছিলেন না। তবে অধিবেশন শুরু হওয়ার পর পার্লামেন্টে প্রবেশ করে নিজেদের নাম স্বাক্ষর করেন কুর্দিশ ব্লকের আইন প্রণেতারা।
প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল সমৃদ্ধ কিছু এলাকার রাজস্বের ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকার ও স্বায়ত্বশাসিত কুর্দিস্তানের মধ্যে মন কষাকষি চলে আসছে।
তবে বর্তমানে উভয়ের জন্যই অভিন্ন হুমকি ‘আইএস’কে রুখতে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে সম্মিলিতভাবে লড়াই করছে ইরাকি সেনাবাহিনী ও কুর্দিশ পেশমার্গা মিলিশিয়ারা। অবশ্য আকাশপথে তাদের সমর্থন দিচ্ছে মার্কিন জঙ্গি বিমান।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৪
আরআই