ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ম্যাক্রোঁ নাকি ল্য পেন, কে আসছেন ফ্রান্সের নেতৃত্বে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৭ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৭
ম্যাক্রোঁ নাকি ল্য পেন, কে আসছেন ফ্রান্সের নেতৃত্বে? ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও মারিন ল্য পেন

‘সুরক্ষিত ইউরোপে শক্তিশালী ফ্রান্স’ নাকি কেবল ‘ফ্রান্সেই মনোযোগ’? ফরাসিরা কী চাইছে? এই প্রশ্নেরই উত্তর দিচ্ছে তারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে। রোববার (৭ মে) সেখানে শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্বের লড়াই।

‘সুরক্ষিত ইউরোপে শক্তিশালী’ ফ্রান্স গড়ার পক্ষের প্রার্থী অঁ মার্শ দলের ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, আর কেবল ‘ফ্রান্সেই মনোযোগ’ দেওয়ার পক্ষের প্রার্থী ন্যাশনাল ফ্রন্টের মারিন ল্য পেন। নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোটে এগিয়ে থাকা এই দুই প্রার্থীর মধ্যেই হচ্ছে রোববারের চূড়ান্ত ভোট বা রানঅফ।

 

গত ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম পর্বের ভোট। সেখানে লড়েছিলেন ১১ প্রার্থী। তাদের মধ্যে কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় লড়াই গড়ায় রানঅফে। এ পর্বে আছেন ৩৯ বছর বয়সী মধ্যপন্থি ম্যাক্রোঁ এবং ৪৮ বছর বয়সী কট্টর-ডানপন্থি ল্য পেন। নির্বাচনে লড়াইয়ের সুযোগ ছিল অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদেরও। কিন্তু নিজের সমর্থনের পাল্লা কম বলে তিনি নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন।

রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ফ্রান্সজুড়ে চূড়ান্ত পর্বের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এই ভোট চলবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। কিছু শহরে রাত ৮টা পর্যন্তও ভোট চলবে। তারপরই প্রাথমিক ফল ঘোষণা শুরু হওয়ার কথা।

প্রস্তাব-বিতর্কসহ নানা ক্ষেত্রে নিজের যোগ্যতা দেখিয়ে জনমত জরিপে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউপন্থি ব্যবসাবান্ধব প্রার্থী ম্যাক্রোঁ। প্রথম পর্বের ভোটের পর ইউরো মুদ্রা ও কট্টর অভিবাসনবিরোধী ল্য পেনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া না গেলেও গত সপ্তাহের চূড়ান্ত বিতর্কের পর তিনি বেশ পিছিয়েই পড়েছেন বলে জানাচ্ছে জরিপগুলো।

ম্যাক্রোঁ নিজেকে ‘সুরক্ষিত ইউরোপে শক্তিশালী ফ্রান্সের পক্ষের প্রার্থী’ হিসেবে প্রচার করছেন। আর ল্য পেন প্রার্থিতায় স্লোগান দিচ্ছেন ‘ফ্রান্সে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং ফ্রান্সকেই বেছে নেওয়ার এখনই সময়’ বলে।

ম্যাক্রোঁ বাম-ডান বিভাজনের মধ্যে সেতুবন্ধন হয়ে দেশজুড়ে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হুজুগ থামাতে চান। তার মতে, এই প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হুজুগেই আমেরিকানরা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভোট দিয়েছে, ইইউ ছেড়েছে ব্রিটিশরা।

অ মার্শের প্রার্থী ম্যাক্রোঁর উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- ইউরোজোনের নিজস্ব পার্লামেন্ট, বাজেট ও অর্থমন্ত্রী থাকবে; সামাজিক নিরাপত্তা কর বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা ও বেকার ভাতায় কাটছাঁট করা হবে, এমনকি সরকারি খাতে সোয়া লাখের মতো চাকরি ছাঁটাইও হবে।

আর ন্যাশনাল ফ্রন্টের প্রার্থী ল্য পেনের উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- ইইউতে ফ্রান্সের থাকা না থাকার বিষয়ে গণভোট, আঞ্চলিক মুদ্রা ইউরো থেকে ফ্রান্সকে প্রত্যাহার, অভিবাসন আইনে ব্যাপক পরিবর্তন এবং বিদেশিদের ফরাসি নাগরিকত্ব অধিকার বাতিল।

আপাতদৃষ্টে বলাই যাচ্ছে, ম্যাঁক্রো জিতলে ফ্রান্সকে হারানোর শঙ্কায় পড়বে না ইইউ। দুর্বল মুদ্রা হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়বে না ইউরোও। কিন্তু ল্য পেন জিতলে যেমন ইইউ পতনের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে, তেমনি মান পড়ে যাবে ইউরোরও। পাশাপাশি ব্যাপক অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপ নেওয়া হলে ইউরোপজুড়ে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়বে।

এইসব বিচার-বিশ্লেষণ শেষে ফরাসিরা কাকে বেছে নিচ্ছেন, সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে দিনের শেষভাগ পর্যন্ত। সাবেক অর্থমন্ত্রী ও ব্যাংকার ম্যাক্রোঁ যদি জিতে যান, তবে তিনি হবেন দেশটির ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট। আর ল্য পেন জিতে গেলে তিনি হবেন ইউরোপের অর্থনৈতিক শক্তিধর রাষ্ট্রটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।