নিউ ইয়র্ক: আজ ভয়াল ১১ সেপ্টেম্বর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ৯ম বার্ষিকী। ২০০১ সালের এদিনে টুইন টাওয়ার নামে খ্যাত বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রসহ আরো ২টি স্থানে পরিকল্পিত বিমান হামলা চালানো হয়।
প্রতিবারের মতো এ বছরও যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের মানুষ গভীর শ্রদ্ধা নিয়ে স্মরণ করছে এদিনে নিহত সবাইকে। তবে টেরি জোনস নামে এক মার্কিন যাজকের টুইন টাওয়ারে হামলার ৯ম বার্ষিকীতে কয়েক শ’ পবিত্র কোরান পোড়ানোর ঘোষণায় মুসলিম বিশ্বে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে।
এ ঘটনার তীব্য নিন্দা জানান মক্কার ইমাম সালেহ বিন হুমাইদ, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং ইয়াধোইয়ানো, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ।
টেরি জোনসের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর গুলিতে এক বিক্ষোভকারী প্রাণ হারায়। শুক্রবার দুপুরে আফগানিস্তানের উত্তরের বাদাকাসান প্রদেশের রাজধানী ফয়জাবাদে গুলিবর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া পাকিস্তানে বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা পুড়িয়ে দেয়।
অবশেষে বিশ্বজনমতের চাপে টেরি জোনস শুক্রবার এক অনির্ধারিত বৈঠকে আজ শনিবারের কোরান পোড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করেন।
এবারও ৯/১১ হামলার ৯ম বার্ষিকীর প্রধান অনুষ্ঠান হবে টুইন টাওয়ার স্থাপনার ‘গ্রাউন্ড জিরো’তে। সেখানে বিউগলের করুণ সুরের সাথে পাঠ করা হবে ওই দিনে নিহতদের নাম। যে মুহূর্তে টুইন টাওয়ারে হামলা চালানো হয়েছিল, ঠিক সে মুহূর্তে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় পালন করা হবে নিরবতা। ভাইস-প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
এদিকে, সন্ত্রাসী হামলার অপরস্থান পেন্টাগনের স্মরণানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
অপরদিকে, গ্রাউন্ড জিরোতে মসজিদ স্থাপনের পক্ষে-বিপক্ষের বিক্ষোভকারীরা ইতোমধ্যে তাদের দাবি আদায়ে ওই স্থানে অবস্থান নিতে শুরু করেছে। তবে পুলিশ বলেছে, তারা দুইপক্ষকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি থেকে দূরে রাখবে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ১৯ সদস্যের একটি জঙ্গি গোষ্ঠী ৪টি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে দুটি বিমানের বিস্ফোরণ ঘটায়। পেন্টাগনে ন্যাটোর সদর দপ্তরে হামলা চালায় অপর একটি বিমান।
এছাড়া ৪র্থ বিমানটি বিধ্বস্ত হয় পেলসিলভানিয়ার এক লোকালয়ে। এ হামলায় প্রাণ হারায় বিশ্বের ৭০টি দেশের ২ হাজার ৯শ ৯৬ জন নাগরিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার জন্য ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বাধীনর আল-কায়দাকে দায়ী করে। এর প্রেক্ষিতেই মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তানে কথিত “সন্ত্রাস বিরোধী” যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এতে বিশ্বব্যাপী মার্কিন বিরোধী জনমত গড়ে ওঠে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১০