ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুতির মাত্র অর্ধেক অর্থ দরিদ্রদের দিয়েছে: বান কি মুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১০
ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুতির মাত্র অর্ধেক অর্থ দরিদ্রদের দিয়েছে: বান কি মুন

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি)-এর ওপর সোমবার তিন দিনব্যাপী জাতিসংঘ সম্মেলন শুরু হয়েছে। কয়েকদিন আগে গুরুত্বপূর্ণ এই আন্তর্জাতিক উপলক্ষ্যকে সামনে রেখে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন অগ্রাধিকারমূলক কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

তিনি সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন রাশিয়াভিত্তিক রিয়া নভোস্তি পত্রিকার নিউইয়র্ক শাখার ব্যুরো প্রধান দিমিত্রি গর্নোসতায়েভ। সাক্ষাৎকারটির চুম্বক অংশ অনুবাদ করেছেন রানা রায়হান

প্রশ্ন: আসন্ন সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সম্মেলনে (এমডিজি) সুনির্দিষ্ট কি কি ফলাফল আপনি আশা করছেন এবং ওই ফলাফলের নথি থেকে কী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন? সংস্থাটির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অঙ্গীকার ও প্রকৃত কাজের মাঝখানে যে ফারাক রয়েছে তা গোছানোর সম্ভাবনা কি এর আছে?

উত্তর: সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা একটি পথ-নক্সা , বিশ্বনেতারা যার অঙ্গীকার করেছিলেন ২০০০ সালে। সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা যাতে অর্জিত হয় সেটা নিশ্চিত করার নৈতিক দায়িত্বটাও ওই বিশ্বনেতাদেরই। আমি অত্যন্ত উৎসাহ বোধ করছি যে, বিশ্বের নেতারা আগামী পাঁচ বছরে ওই অঙ্গীকার পূরণে সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। এসব প্রতিশ্রুতি আদৌ বাস্তবায়িত হবে কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ও আছে। তবে আমার বিশ্বাস, সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব, পর্যাপ্ত সম্পদ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা- এসবের সঠিক মেলবন্ধন ঘটানো গেলে এসব লক্ষ্য অর্জনে আমরা সক্ষম হবো। আমরা সময়ের বিরুদ্ধে ছুটছি, এ সত্ত্বেও জোরালো নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে আমরা এসব লক্ষ্য পূরণ করতে পারবো। মানবজাতির সামনে এটা এক নৈতিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব।

প্রশ্ন: সম্প্রতি আপনি দরিদ্র দেশগুলোকে সাহায্য হিসেবে ধনী দেশগুলোর প্রতিশ্রুত অর্থের ব্যাপারে আলোচনা করেছেন, যে অর্থ তারা এখনো দেয়নি। আপনি ঠিক কী পরিমাণ অর্থের কথা বলছেন, আর কোন কোন দেশ তাদের অঙ্গীকার পূরণ করেনি?

উত্তর: অঙ্গীকারের শুরুটা হয়েছিল গ্লেনিগলস সম্মেলন থেকে, আর জি-৮ ও জি-২০ সম্মেলনে এরকম অঙ্গীকার বিস্তর দেওয়া হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার পূরণ করা হয়নি। সেজন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। আমি এই রাজনৈতিক সদিচ্ছাটাই বাড়াতে চাচ্ছি আর দাতা দেশগুলোকে তাদের অঙ্গীকার পূরণের আহ্বান জানাতে যাচ্ছি।

প্রশ্ন: আপনি কি অর্থের আনুমানিক অঙ্কটা বলতে পারবেন? এখনো কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন?

উত্তর: গ্লেনিগলস সম্মেলনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এতদিনে আফ্রিকার দেশগুলোর কম করে হলেও ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি পেয়ে যাওয়ার কথা ছিল। অথচ পাওয়া গেছে মাত্র এর অর্ধেক।

প্রশ্ন: জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কথা বলা যাক। আপনি কি জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণ কমানোর প্রসঙ্গ সামনে তুলে ধরতে কোনো পদক্ষেপের কথা বিবেচনায় রেখেছেন? সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে এ সমস্যাটা রয়েই গেছে।

উত্তর: জাতিসংঘ ও সংস্থাটির মহাসচিব হিসেবে আমার তরফ থেকে সবচেয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা চলবে। আমি আশা করি, কানকুনে আমরা কয়েকটি ইস্যুতে দৃষ্টিগ্রাহ্য উন্নতি লাভ করব। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা।

জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আমার উচ্চ পর্যায়ের একটি প্যানেল কঠোর পরিশ্রম করছে। প্যানেলটি ২০২০ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে প্রতি বছর ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার পৌঁছে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ করছে। এর আগে ২০১২ সালের মধ্যে উন্নত দেশগুলোকে প্রথম কিস্তিতে তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দিতে হবে। এটা তিন বছরে বাস্তবায়ন করা হবে।

এরইমধ্যে আমরা বন উজাড়ের ফলে সৃষ্ট গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে দৃষ্টিগ্রাহ্য উন্নতি করেছি। আমরা প্রযুক্তি বিনিময়, আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তোলা ও অর্থনৈতিক সহায়তার সঙ্গে খাপখাওয়ানোর ক্ষেত্রেও ভালো উন্নতি করেছি।

প্রশ্ন: আপনি যে অর্থের অঙ্ক উল্লেখ করলেন এ বিষয়ে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো অঙ্গীকার পেয়েছেন?

উত্তর: জলবায়ু পরিবর্তন ও অর্থায়ন বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের একটি প্যানেল কাজ করছে। প্যানেলটি কর্মপদ্ধতি বের করবে। এরপর অর্থের উৎস ও অর্থায়ন নির্দিষ্ট করবে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।