শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদ শূন্য ঘোষণা করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। শনিবার (১৬ জুলাই) ১৩ মিনিটের বিশেষ অধিবেশনে পার্লামেন্টের মহাসচিব ধম্মিকা দাসানায়েক প্রেসিডেন্ট পদ শূন্য ঘোষণা করেন।
ধম্মিকা দাসানায়েক পার্লামেন্টকে জানান, আগামী ১৯ জুলাই সকাল দশটার মধ্যে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে হবে। একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ২০ জুলাই ভোট নেওয়া হবে।
সংবিধানের পরিপ্রেক্ষিতে গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের কথা জানাতে শনিবার বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয় পার্লামেন্টে। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া অধিবেশনে গোতাবায়ার পাঠানো পদত্যাগের চিঠি পড়ে শোনান ধম্মিকা দাসানায়েক।
চিঠিতে গোতাবায়া স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, শ্রীলঙ্কাকে গ্রাস করেছে এমন অর্থনৈতিক সংকট এড়াতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার আর্থিক সঙ্কটের মূল ছিল কয়েক বছরের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা যা তিনি নিরসনের চেষ্টা করছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে শ্রীলঙ্কায় পর্যটক না আসা, বিদেশি কর্মীদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স আসাতেও সমস্যা হচ্ছিল।
গোতাবায়া বলেন, এটি আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস, আমি সংকট মোকাবিলায় সংসদ সদস্যদেরকে সর্বদলীয় বা ঐক্য সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানানোসহ সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিয়েছি।
ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের চিঠি পড়ে শোনানোর পর সাংগঠনিক বলে পার্লামেন্টে এ পদটি শূন্য ঘোষণা দেন ধম্মিকা দাসানায়েক।
অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টকে সমর্থন দেওয়ায় প্রশ্ন
শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ পদে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব নেওয়া রণিল বিক্রমাসিংহের নাম উঠে আসছে। তাকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে রাজনৈতিক দল শ্রীলঙ্কা পডুজানা পেরামুনার (এসএলপিপি)। কিন্তু দলটির চেয়ারম্যান জিএল পেইরিস এ ব্যাপারে অবগত নন। তিনি এসএলপিপির সাধারণ সম্পাদক সাগারা কারিয়াওয়াসামকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেছেন।
এক বিবৃতি প্রকাশ করে সাগারা কারিয়াওয়াসামকে তিনি প্রশ্ন করেছেন, কার পরিধিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে? সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কে কে উপস্থিত ছিলেন? কিসের ভিত্তিতে অন্তবর্তী প্রেসিডেন্টকে প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত করা হয়েছিল? তাদের এ সিদ্ধান্তের প্রত্যাশিত সময়, তারিখ এবং স্থান উল্লেখ করে কারণ দর্শাতে বলেছেন জিএল পেইরিস। সিদ্ধান্তটি দলের নীতির কীভাবে মেলে সে উত্তরও দিতে বলেছেন এসএলপিপি চেয়ারম্যান।
অধিক প্রার্থী, তাই ভোট দেবে না ফ্রিডম পার্টি
শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির চেয়ারম্যান ও সাকেব প্রেসিডেন্ট মাইথরিপালা সিরিসেনা বলেছেন, তার পার্টির সদস্যরা বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবে না। কারণ, এ পদে প্রার্থী সংখ্যা বেশি।
ভোটের পরিবর্তে তিনি আরেক উপায়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা বলেন। মাইথরিপালার ভাষ্য, একজন একক প্রার্থীকে একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে সাংবিধানিক পদ্ধতিতে আসা উচিত। তিনি কীভাবে সর্বদলীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা করছেন তা সহ দেশের বর্তমান সংকট সমাধানের পরিকল্পনা করেছেন তা ব্যাখ্যাও প্রয়োজনীয়।
তিনি এও বলেন, যিনি প্রার্থী হবেন, তার উচিত কীভাবে তিনি প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাদ্য, জ্বালানি ও সারের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতি মেটাতে পরিকল্পনা করছেন জনগণকে তা জানানো।
সূত্র : নিউজ ফার্স্ট ও ডেইলি মিরর
বাংলাদেশ সময় : ১৫৪৫ ঘণ্টা, ১৬ জুলাই, ২০২২
এমজে