ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ কার্তিক ১৪৩২, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

বিকল্প ধারা মহাসচিব মান্নানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৩৪, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
বিকল্প ধারা মহাসচিব মান্নানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ঢাকা: আট কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি লিমিটেডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মেজর (অব.) এম এ মান্নানসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করা হয়।

 

কমিশনের উপ-পরিচালক আবদুল মাজেদ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ বিভাগ থেকে বাংলানিউজকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

মামলার এজহার থেকে জানা যায়, মেজর (অব.) এম এ মান্নান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজসে, একে অন্যের সহায়তায় মেসার্স টেলিকম সার্ভিসেস লিমিটেড-এর মালিক মো. আমিনুর রহামানের নামে নিরাপত্তা জামানত ও মর্টগেজ ছাড়াই আট কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে আত্মসাত করেন। যা সুদ ও আসলসহ ৮ কোটি ৩৮ লাখ ৮১ হাজার ৭০৫ টাকা।  

দুদক জানায়, জাল জালিয়াতি করে ঋণের মাধ্যমে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ, স্থানান্তর ও রূপান্তর করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ধারায় মামলা করা হয়।

মামলা অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১১ সালে ৮ ডিসেম্বর মেসার্স টেলিকম সার্ভিস লিমিটেড-এর মালিক মো. আমিনুর রহমানের বিআইএফসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর ৬০ মাস মেয়াদে ব্যবসায়িক প্রয়োজন মেটানোর জন্য ৮ কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন করেন।  তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থাপনা কমিটি ১৫ শতাংশ সুদে ৬০ মাসের জন্য এই ঋণের প্রস্তাব বোর্ডে উত্থাপন করে।

দুদকের করা মামলার এজাহার থেকে আরও জানা যায়, সিকিউরিটি হিসেবে প্রত্যেকটি ঋণের বিপরীতে ৬০ পোস্টডেটেড ও একটি করে তারিখবিহীন স্বাক্ষরিত চেক জমা রাখার কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে নিরাপত্তা জামানত হিসেবে চেক কিংবা অন্য কোনো সম্পদ মর্টগেজ নেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের আবেদনকারীর সিআইবি রিপোর্টও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা না হলেও পরিচালনা পর্ষদ পাঁচ বছরের জন্য ৮ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেন।

মেজর (অব.) মান্নান ছাড়াও এই মামলার বাকি ১১ আসামি হলেন- ঋণ গ্রহীতা মো. আমিনুর রহমান, বিআইএফসির পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক আব্বাস উদ্দিন আহমেদ, এ এন এম জাহাঙ্গীর আলম, রইস উদ্দিন আহমেদ, এ. কে. এম মহিউদ্দিন আহমেদ, রোকো ফেরদৌস, বিআইএফসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহমুদ মাণিক, বিআইএফসির সাবেক উপ-ব্যবস্খাপনা সম্পাদক ইনামুর রহমান, বিআইএফসির সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব বিজনেস সৈয়দ ফকরে ফয়সাল, বিআইএফসির সাবেক এভিপি অ্যান্ড ইউনিট হেড আহমেদ করিম চৌধুরী এবং সাবেক সিনিয়র অফিসার বিজনেস মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলার বিষয়ে এ মামলার প্রধান আসামি বিকল্প ধারা বাংলাদেশ মহাসচিব মেজর (অব.) এম এ মান্নানের ব্যক্তিগত ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানির লিমিটেড থেকে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে দুদক। যার মধ্যে দুটি মামলা চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, বাকি তিনটি মামলা এখনও তদন্ত করছে দুদক। এসব মামলায় মোট ৮৫ কোটি ২০ লাখ ৮৮ হাজার ১৪ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
এসআর/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।