ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সংযোগ সড়ক ছাড়াই দাঁড়িয়ে আছে আড়াই কোটি টাকার সেতুটি

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
সংযোগ সড়ক ছাড়াই দাঁড়িয়ে আছে আড়াই কোটি টাকার সেতুটি

বরগুনা: বরগুনার আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ঘোপখালী খালের উপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) দুই বছর আগে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করেছে। তবে সেতুর দুই পাশে চলাচলের জন্য কোনোসংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি জনসাধারণের কোনো কাজে আসছে না।

এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নসহ ওই সড়কে চলাচলাকারী অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। এ কারণে দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সেতুটি চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, ২০২০ সালের জুন মাসে বরগুনা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী অফিস আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ঘোপখালী খালে সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। ২ কোটি ৪৯ আখষ টাকা ব্যয়ে এ সেতুর নির্মাণ কাজ পায় পটুয়াখালীর কেকে এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের জুন মাসে দুই পিলারে ২৪ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৩২ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। মূল সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হলেও গত দেড় বছর ধরে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।

কার্যাদেশে সেতুর দুই প্রান্তে একশ ফুট অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু  ঠিকাদার সংযোগ সড়ক না করেই সেতু নির্মাণে বরাদ্দ দুই কোটি টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন।

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ সংযোগ সড়ক নির্মাণের জায়গা না রেখেই সেতুর প্লান করা হয়েছে। এছাড়া ঠিকাদার কার্যাদেশ অনুসারে কাজ না করে ব্রিজ ফেলে রেখেছেন।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ, সংযোগ সড়ক বিহীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয়রা চলাচলের জন্য সেতুর দুই পাশে ১০-১২ ফুট দীর্ঘ কাঠের সিড়ি দিয়ে রেখেছেন। ওই সিড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ সেতুতে ওঠে পার হচ্ছেন। কার্যাদেশ অনুসারে সেতুর দুই প্রান্তে একশ ফুট সংযোগ সড়ক নির্মাণের কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে তার জন্য পর্যন্ত জায়গা নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসহাক মুন্সি ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, সেতু নয়, এটা মরণ ফাঁদ। ঠিকাদার সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ না করেই দেড় বছর ধরে ফেলে রেখেছেন। এতে রোকজন চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসা. সোহেলী পারভীন মালা বলেন, সরকার সেতু নির্মাণ করে মানুষের উপকারার্থে। কিন্তু এখন এ সেতুটি কারো কাজে আসছে না।

তিনি বলেন, ঠিকাদারকে বারবার বলা সত্ত্বেও সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করছেন না। এতে মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। তাই দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সেতুটি উন্মুক্ত করে মানুষের ভোগান্তি লাঘবের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কেকে এন্টার প্রাইজের মালিক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সিকদার বলেন, সেতুটি কার্যাদেশের চেয়ে বেশি উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে। তাই সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে সমস্যা হচ্ছে। তারপরও অল্প দিনের মধ্যেই সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করব।

আমতলী উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ঠিদাকার মূল সেতু নির্মাণ শেষে দুই কোটি টাকা বিল নিয়েছেন, কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ করছেও না বিলও নিচ্ছে না। কাজ না করে দীর্ঘদিন ফেলে রেখেছেন।

বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রীয় মুখার্জি বলেন, সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।