ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মরছে একের পর চশমাপরা হনুমান

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মরছে একের পর চশমাপরা হনুমান

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার মিশ্রচির সবুজ লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবারও একটি চশমাপরা হনুমানের মৃত্যু হয়েছে। গত দুই মাসে এ নিয়ে একই এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনটি হনুমান মারা গেল।

শুক্রবার (০৭ এপ্রিল) রাতে লাঠিছড়ার পাশে সড়কে ছোট একটি চশমাপরা হনুমান শাবককে চ্যাঁচাতে দেখেন স্থানীয়রা। সড়কের একপাশে একটি  হনুমানকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তারা।

বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরা মায়ের দুধ পান করে বেঁচে থাকে। মায়ের দুধ পান করতে না পারলে এরকম ছোট শাবকগুলো বাঁচানো কঠিন। এরা মায়ের সঙ্গ ছাড়া বাঁচে না।

বন্যপ্রাণী বিভাগ সূত্র জানায়, এর আগে একই স্থানে গত বছরের ১ অক্টোবর আরো একটি চশমাপরা হনুমানের মৃত্যু হয়। এর পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি বনের কাছে অবস্থিত দিলখোশ চা-বাগান এলাকায় সড়কের পাশে মৃত অবস্থায় একটি চশমাপরা হনুমান শাবককে পাওয়া গিয়েছিল। সেটিরও মৃত্যু হয়েছিল বিদ্যুৎস্পৃষ্টে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, এভাবে একের পর এক হনুমানের মৃত্যু ঘটছে। এভাবে মরতে থাকলে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণিগুলো নিঃশেষ হয়ে যাবে।

বন বিভাগের লাঠিটিলা বিটের দায়িত্বে থাকা বিট কর্মকতা মো. রুমিজ্জামান বলেন, গত দুই মাসে একই স্থানে দুটি চশমাপরা হনুমান বৈদ্যুতিক তারে স্পর্শ হয়ে মারা গেছে। এই সংবাদটি খুব খারাপ। হনুমানের বাচ্চাটি রাস্তায় পড়ে আছে। স্থানীয়রা আমাকে খবর দিয়েছে। আমি বিষয়টি দেখবো।

পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের সদস্য, পরিবেশকর্মী কামরুল হাসান নোমান ও খুরশেদ আলম বলেন, চিরসবুজ লাঠিটিলা বনে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণীর বসবাস রয়েছে। তবে এভাবে একের পর এক প্রতিনিয়ত হনুমানগুলো মারা গেলে অচিরেই সব হারিয়ে যাবে। এখনই এদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

এদিকে বন বিভাগ হনুমানসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চলাচলের জন্য বন বিভাগের উদ্যোগে ওই বনে ‘ক্যানোপি ব্রিজ’ স্থাপন করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, কিছু দিন আগে একটি দল ব্রিজ পারাপার হতে দেখেছেন।

পল্লী বিদ্যুতের বড়লেখা জোনাল অফিসের এজিএম একেএম আশরাফুল হুদা বলেন, লাঠিটালা সংরক্ষিত বনের বৈদ্যুতিক লাইনে কাভার লাগাতে বন বিভাগ থেকে আমাদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আমরা সেটির ডিজাইন রেডি করে হেড অফিসে পাঠিয়েছি। হেড অফিসের প্রকৌশল বিভাগ লাইন নির্মাণের বিষয়টি দেখে। তবে বর্তমানে হেড অফিসে বিষয়টি কোন পর্যায়ে আছে তা আমার জানা নেই।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকতা ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হনুমানের মৃত্যুর বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
বিবিবি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।