ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রীতির রহস্যজনক মৃত্যু: তদন্তসাপেক্ষে শাস্তি চায় চা-শ্রমিক ফেডারেশন

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪
প্রীতির রহস্যজনক মৃত্যু: তদন্তসাপেক্ষে শাস্তি চায় চা-শ্রমিক ফেডারেশন

মৌলভীবাজার: ঢাকার মোহাম্মদপুরে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসার কাজে নিয়োজিত চা শ্রমিক পরিবারের সন্তান প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তসাপেক্ষে শাস্তি চেয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতারা।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তারা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মিরতিঙ্গা চা বাগানের বাড়িতে প্রীতির পরিবারের খোঁজখবর নিতে যান।

সেখানে এ শাস্তির দাব জানান ফেডারেশনের নেতারা।  

এসময় উপস্থিত ছিলেন চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক কিরণ শুক্ল বৈদ্য, অর্থ সম্পাদক প্রেম কুমার পাল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ নন্দী এবং স্থানীয় নেতারা।

ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে প্রীতির বাবা-মা জানান, ডেইলি স্টারের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি মিন্টু দেশোয়ারার মাধ্যমে পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় কাজে যায় তাদের ছোট মেয়ে প্রীতি। শুরু থেকেই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে প্রীতিকে তেমন যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না। ৬ ফেব্রুয়ারি যেদিন প্রীতি মারা যায়, সেদিন মিন্টু দেশোয়ারা তাদের শ্রীমঙ্গল যাওয়ার কথা বলেন। শ্রীমঙ্গল গেলে মিন্টু দেশোয়ারা তাদের মেয়ে মারাত্মক অসুস্থ বলে জানান এবং এখনই তার সঙ্গে ঢাকায় যেতে হবে বলেন। সাংবাদিক মিন্টু দেশোয়ারার সঙ্গে তারা ঢাকায় গেলে সরাসরি থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে জানতে পারেন, প্রীতি নবম তলা থেকে পড়ে মারা গেছে। এরপর প্রীতির লাশ নিয়ে বাড়ি চলে আসেন তারা। এ ঘটনায় মামলা হলো কি না সেটা তারা জানেন না বলেও জানান। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড অভিযোগ তুলে তারা প্রীতি হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

এসময় চা শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা প্রীতির পরিবারের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, সাংবাদিক মিন্টু দেশোয়ারার উচিত ছিল মেয়েটাকে স্কুলে পাঠানোর সামগ্রিক আয়োজন করা। তিনি তা না করে শিশুটিকে কাজে ঢুকিয়ে দিলেন, যা প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। একই অপরাধে মিন্টু দেশোয়ারাও অপরাধী এবং তারও বিচার হওয়া দরকার। ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় এর আগেও ফেরদৌসী নামে আরেক শিশু গৃহশ্রমিক নবম তলা থেকে লাফ দিয়ে পড়ে আহত হয়। মেয়েটির মা মামলা করলেও তিনি আজও বিচার পাননি। আগের অপকর্মের বিচার হলে এমন নৃশংসভাবে মেয়েটাকে মেরে ফেলতে পারতো না। এটা প্রকারান্তরে মৃত্যু নয়, সংঘটিত হত্যাকাণ্ড।

এ ঘটনার যথাযথ বিচার নিশ্চিতের দাবিতে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সবসময় সোচ্চার আছে এবং একই সঙ্গে চা জনগোষ্ঠীর সকল প্রকার ন্যায়সংগত অধিকার আদায়ে ফেডারেশন পাশে থাকবে বলে নেতারা জানান।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে মোহাম্মদপুরের শাজাহান রোডের বহুতল বাড়ির নিচতলা থেকে গৃহকর্মী প্রীতিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ওই ভবনের নবমতলায় থাকেন ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক।  

প্রীতির মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। পুলিশ সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪
বিবিবি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।