ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘ছেলের লাশ এনে দেন, শেষবারের মতো দেখতে চাই’  

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২৪
‘ছেলের লাশ এনে দেন, শেষবারের মতো দেখতে চাই’   ওমানে অগ্নিকাণ্ডে নিহত বাংলাদেশি প্রবাসী হোসেন মিয়াজী

চাঁদপুর: ওমানে অগ্নিকাণ্ডে নিহত বাংলাদেশি প্রবাসী হোসেন মিয়াজীর (২২) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।  

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক বাবা আব্দুস সালাম (৭০)।

মা নুরজাহানের বিলাপে ভারী আশপাশের পরিবেশ। বার বারই বলছেন,  ‘ছেলের লাশ দেশে এনে দেন, শেষবারের মতো দেখতে চাই। ’   

ওমানে নিহত হোসেন মিয়াজীর বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তি পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের নিজমেহার গ্রামের যুগী বাড়িতে।  

ওমানের উত্তরাঞ্চলীয় শহর বুরাইমির একটি সোফা কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। গত ১১ মার্চ ভোর রাতে ওমানে কারখানায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সৃষ্ট আগুনে নিহতদের একজন তিনি।  

পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস ছিলেন হোসেন।  এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ২০১৯ সালে তাকে বিদেশ পাঠান বাবা আব্দুস সালাম। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ঋণের দায় কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবারটি।  

এমন পরিস্থিতিতে ছেলের মৃত্যুতে ঋণের দায় ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই পরিবারের ওপর।    

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকেলে হোসেন মিয়াজীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিহতের মা ও বোনেরা আহাজারি করছেন। বাবা আব্দুস সালাম কথা বলছেন না তেমন। হোসেন নিহত হওয়ার খবরে তার বাড়িতে এসে ভিড় করেছেন স্বজন-প্রতিবেশীরা।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, হোসেনের বাবা আব্দুস সালাম এক সময় রিকশা চালাতেন। বর্তমানে বয়সের ভারে কাজে যেতে পারেন না। পরিবারের স্বচ্ছলতার আশায় ২০১৯ সালে হোসেন ওমান যান। করোনাকালীন বেকারত্ব ও কাগজপত্র বৈধ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত তাদের ৮ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে।  

হোসেনের ছোট বোন মরিয়ম আক্তার জানান, ভাইয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শ্বশুরবাড়ি এলাকার এক এনজিও থেকে ঋণ এনে দিয়েছেন তিনি। একটি দুর্ঘটনা তাদের সবাইকে পথে বসিয়ে দিল।  

হোসেনের মা নুরজাহান বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, বেশি লাভের আশায় ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি, আজ আমার সব শেষ। সরকার যেন আমার ছেলের লাশ দেশে এনে দেন, শেষবারের মতো দেখতে চাই।   

পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হোসেন অত্যন্ত বিনয়ী ও কর্মঠ ছিল। তার লাশ দেশে আনতে পরিবারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২৪
এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।