ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্মার্টকার্ড বিতরণের লাইনে দাঁড়িয়ে চেইন চুরি, ১২ নারী গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২৪
স্মার্টকার্ড বিতরণের লাইনে দাঁড়িয়ে চেইন চুরি, ১২ নারী গ্রেপ্তার

বরিশাল: বরিশালে স্মার্টকার্ড (ভোটার আইডি কার্ড) বিতরণকালে একাধিক নারীর স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় চোর চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা সকলেই নারী এবং তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলায়।

বুধবার (০৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অলিউল ইসলাম।

তিনি জানান, এ চক্রটির আরও অনেক সদস্য রয়েছে। মূলত এরা বড় কোনো অনুষ্ঠান বা আয়োজনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। পরে সেখানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সু-কৌশলে নারীদের স্বর্ণালংকার, টাকাসহ বিভিন্ন সামগ্রী হাতিয়ে নেয়।

মামলার বরাতে তিনি জানান, উপজেলার বাগধা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বাগধা ইউনিয়নের ১ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চার হাজার ভোটারদের মাঝে জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়। বিতরণের সময় নারীদের লাইনে দাঁড়ানো স্থানীয় খাজুরিয়া গ্রামের বাইজিদ তালুকদারের স্ত্রীর রুমা বেগমের স্বর্ণের চেইন চুরির সময় এক নারীকে আটক করা হয়। সেও ওই লাইনে বোরকা পরে দাঁড়িয়েছিল। আটকের পর জানা গেছে- সুমাইয়া আক্তার (৩৫) নামে ওই নারী স্থানীয় বাসিন্দা নন, সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছির নগর উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামের মিশু মিয়ার স্ত্রী। পরে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হলে আগৈলঝাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিল্টন মন্ডল ঘটনাস্থলে গিয়ে সুমাইকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের পর সুমাইয়া আক্তার জানান, তারমতো আরও অনেকে বোরকা পরে লাইনে ও আশপাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর তার দেয়া তথ্যানুযায়ী ওই এলাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছির নগর উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামের সোহরাব আলির স্ত্রী সেলিনা বেগম (৩৫), লিলু মিয়ার স্ত্রীর রুমা বেগম (৪৫), জহির মিয়ার স্ত্রী বানেছা বেগম (২৫), মোবারক মিয়ার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার (২২), জহুর আলির স্ত্রী কেতারা বেগম (৪৮), আলাউদ্দিন শাহ’র স্ত্রী সালমা আক্তার (৩৪), জিতু মিয়ার স্ত্রী রোকসানা বেগম (৩০), আজিজ মিয়ার স্ত্রী আজিরন বেগম (৩০), হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার মোরাপুর গ্রামের সুজন মিয়ার স্ত্রী কাকলি বেগম (২৩), এলাচ মিয়ার স্ত্রী দিনা আক্তার (২২), মুজাহিদ মিয়ার স্ত্রী রাফিয়া বেগম (৩০)সহ ১২জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়।

এ ঘটনায় রুমা বেগম বাদী হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় চুরির মামলা দায়ের করলে সেই মামলায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অলিউল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে- তারা সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য। তাদের আরও সদস্য থাকতে পারে, যাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, এরা এত চতুর চুরির সাথে সাথে চেইন অন্যত্র সরিয়ে দেয়। অনেক তল্লাশি করেও কারও কাছ থেকে খোয়া যাওয়া একটি চেইনও উদ্ধার করা যায়নি। তবে রুমা বেগমের মামলা দায়েরের সময় আমরা ৫টি চেইন চুরির কথা শুনেছিলাম কিন্তু বুধবার বিকেল পর্যন্ত ১৮ টি চেইন চুরির বিষয় থানা পুলিশকে অবহিত করেছে স্থানীয়রা।

অপরদিকে সংখ্যা জানাতে না পারলেও বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি জানিয়েছেন তার ইউনিয়নের ১ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্মার্টকার্ড বিতরণ করার সময় একাধিক মহিলার গলার চেইন চুরি হয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২৪
এমএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।