ঢাকা, শনিবার, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ জুলাই ২০২৫, ০০ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারকে জানাতে হবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৫২, জুলাই ২৪, ২০২৫
গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারকে জানাতে হবে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন বক্তব্য রাখেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল

ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। সংশোধিত আইন কার্যকর হলে কাউকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়ার সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবার বা বন্ধু বা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানাতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আইনগত একটা গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করা হয়েছে। ইতোপূর্বে আমরা সিপিসি বা দেওয়ানি কার্যবিধি পরিবর্তন করেছিলাম বা সংশোধন করেছিলাম। আজকে আমরা সিআরপিসি বা ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধন করেছি।

তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের দুইটা সিদ্ধান্ত ছিল, গ্রেপ্তার করার ব্যাপারে যাতে স্বচ্ছতা থাকে, জবাবদিহিতা থাকে। গ্রেপ্তার পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির যেন অধিকার থাকে। এই রায়গুলোর আলোকে আরও বিস্তারিতভাবে আমরা বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন, সুপ্রিম কোর্ট কনসার্ন এক্সপার্ট সবার সঙ্গে বৈঠক করে সংশোধন চূড়ান্ত করেছি।

আসিফ নজরুল বলেন, কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনের কথা বলি, এখন থেকে এই সংশোধন কার্যকর হওয়ার পর থেকে যে গ্রেপ্তার করবে, যে পুলিশ অফিসার তার ক্লিয়ার আইডেন্টিটি থাকতে হবে, তার নেমপ্লেট থাকতে হবে, তার আইডি কার্ড থাকতে হবে। যে ব্যক্তি গ্রেপ্তার হচ্ছে তিনি চাহিবামাত্র যে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে তাকে আইডেন্টিটি কার্ড দেখাতে হবে, এটা বাধ্যতামূলক। তাকে যখন থানায় নিয়ে আসা হবে যত দ্রুত সম্ভব গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির পরিবার বা বন্ধু বা আইনজীবীকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানাতে হবে যে, গ্রেপ্তার করেছি আমরা এই কারণে গ্রেপ্তার করেছি, এই মামলায় গ্রেপ্তার করেছি এবং গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি এখানে আছে। যত দ্রুত সম্ভব করতে হবে এবং কোনো অবস্থাতেই বারো ঘণ্টার বেশি সময় নেওয়া যাবে না, এরমধ্যে জানাতেই হবে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তির শরীরে যদি আঘাতের চিহ্ন থাকে বা গ্রেপ্তার ব্যক্তি যদি বলেন, আমি অসুস্থ বোধ করছি। অবশ্যই সাথে সাথে তাকে নিকটস্থ ডাক্তারের কাছে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা সুবিধা দিতে হবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা বলেছি প্রত্যেকটা গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে একটা মেমোরেন্ডাম রাখতে হবে, বিস্তারিত তথ্য থাকতে হবে। কাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কী অভিযোগে কোন আইনে, তার পরিবারের কার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, কে গ্রেপ্তার করেছে। ডিটেইল একটা মেমোরেন্ডাম থাকবে প্রত্যেকটা গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে। আগের ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যে গ্রেপ্তার করতো, বলতো আমরা জানি না। র‌্যাব গ্রেপ্তার করে বলতো যে পুলিশ জানে, পুলিশ গ্রেপ্তার করে অন্য এজেন্সির নাম বলতো। আমরা আইনে বলেছি, যে সংস্থাই গ্রেপ্তার করুক তাদের কনসার্ন অফিসে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি কেন গ্রেপ্তার করেছে, কোথায় গ্রেপ্তার করেছে ১২ ঘণ্টার মধ্যে কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, সমস্ত তথ্য সেখানে থাকতে হবে।

এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।