ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ০১ আগস্ট ২০২৫, ০৬ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

কমিশনের বৈঠকে উচ্চকক্ষ নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:২১, জুলাই ৩১, ২০২৫
কমিশনের বৈঠকে উচ্চকক্ষ নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক

ঢাকা: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান সংলাপের ২৩তম দিনে উচ্চকক্ষ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মধ্যাহ্নবিরতির আগে এ ঘটনা ঘটে।

যদিও পরে দুঃখ প্রকাশ ও কোলাকুলির মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

দুপুরে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা উচ্চকক্ষের হাতে সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা দিতে চাই না। পৃথিবীর কোনো দেশেই অনির্বাচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন হয় না। তিনি উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিদের ‘অনির্বাচিত’ বলেও অভিহিত করেন।

এর জবাবে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, ভোটের সংখ্যানুপাতিক ভিত্তিতে গঠিত হলে উচ্চকক্ষও জনগণের প্রতিনিধিত্বের প্রতিফলন। তাই একে অনির্বাচিত বলা ঠিক নয়। এরপর সালাহউদ্দিন আহমদ ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করলে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।

জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা তখন মাইক ছাড়া বলেন, ২০২৩ সালে যখন আন্দোলন হচ্ছিল, তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? হুদার এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জাবেদ রাসিনও পাল্টা প্রতিবাদ করেন। মুহূর্তেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষকে মাইক ছাড়া পাল্টাপাল্টি কথা বলতে দেখা যায়।

কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ পরিস্থিতি শান্ত করতে বলেন, হুদা ভাই, এর আগেও আপনারা আপত্তি তুলেছেন। কিন্তু এখানে কে কোথা থেকে এসেছে- এ প্রশ্ন তোলা বিপজ্জনক। তাহলে আমাকেও প্রশ্ন করা হতে পারে। আমরা সে পথে যাচ্ছি না।

এ সময় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, তিনি (হুদা) এ কথা বলতেই পারেন না। সালাহউদ্দিন আহমদ আখতারকে শান্ত থাকতে অনুরোধ করেন। কিন্তু আখতার বলেন, আমরা তো ছোটবেলা থেকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়ছি।

আলী রীয়াজ পুনরায় হস্তক্ষেপ করে বলেন, কারো লোকাস স্ট্যান্ডিং নিয়ে প্রশ্ন তোলা অনুচিত। এখানে সবাই নিজের জায়গা থেকেই প্রতিনিধিত্ব করছেন।

তখন আখতার বলেন, গায়ের জোরে প্রশ্ন তোলা হলে তা মানা যায় না। আমরা গণঅভ্যুত্থান করেছি, ছাত্র-জনতা মাঠে ছিল, সেটির অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। এজন্য তার (হুদা) দুঃখ প্রকাশ করা উচিত।

সালাহউদ্দিন আহমদ তখন বলেন, কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকে, স্যরি বলেন।

পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি কিছু বলার চেষ্টা করলে রীয়াজ তাকে বসতে অনুরোধ করেন। এরপর হুদা মাইক নিয়ে বলেন, ২০২৩ সালে আমরা উচ্চকক্ষের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তখন পিআর প্রস্তাব কোথায় ছিল- এ প্রেক্ষাপটে মন্তব্য করেছিলাম। তারপরও কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দুঃখিত।

এরপর আলী রীয়াজ মধ্যাহ্নভোজের বিরতির ঘোষণা দেন। বিরতির সময় সৈয়দ এহসানুল হুদা ও আখতার হোসেনকে কোলাকুলি করতে দেখা যায়। হুদাকে তখন বলতে শোনা যায়, আমার আপনাদের নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অভিপ্রায় ছিল না। আমরা এটা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি না করি।  

পরে হুদা জাবেদ রাসিনের সঙ্গেও কোলাকুলি করেন।

এসবিডব্লিউ/জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।