ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে যাওয়া আলম ট্রেডার্স নামের রাসায়নিক গুদামে ‘সার্চ অপারেশন’ সম্পন্ন করতে আরও ৩৬ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা গতকাল সকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে উদ্ধার ও নির্বাপণ কার্যক্রম শুরু করেছি। গার্মেন্টস অংশ—যা পরে আনোয়ার গার্মেন্টস নামে শনাক্ত হয়—তার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে আলম ট্রেডার্স নামে পরিচিত রাসায়নিক গুদামে এখনো ধাপে ধাপে ড্রেন আউট প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি আরও বলেন, গুদামে প্রায় ছয় থেকে সাত ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ছিল, যেগুলোর সঠিক মাত্রা ও প্রকৃতি এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। আমরা প্রগ্রেসিভ ও সিস্টেমেটিক উপায়ে পানি দিয়ে ফায়ারফ্লোর ফ্লাড করে কেমিক্যালগুলো ড্রেন আউট করছি। এতে সময় লাগছে, তবে এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ।
ফায়ার সার্ভিস পরিচালক বলেন, আলম ট্রেডার্স ভবনটি অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ড্রোনের ফুটেজে দেখা গেছে, তীব্র তাপমাত্রায় ভবনের কলাম ও পিলারে ফাটল ধরেছে। ফলে ‘সার্চ অপারেশন’ চালানো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
তিনি জানান, টঙ্গির পূর্বের দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা থেকে এবার তারা আরও প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতিতে কাজ করছেন—ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভবনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, যাতে নতুন করে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম আরও বলেন, আমরা যখন গুদামের মূল ফটকে পৌঁছাই, তখন দেখি দরজায় তালা মারা ছিল। পরে হাইড্রলিক স্প্রেডার ও কাটার দিয়ে তা খোলা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ভেতরে কেউ ছিল না। তবে সার্চ অপারেশন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।
তিনি জানান, ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখনই ভেতরে প্রবেশ করে পূর্ণাঙ্গ ‘সার্চ অপারেশন’ চালানো কঠিন। পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি সম্পন্ন করতে আরও ৩৬ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
ফায়ার সার্ভিসের অবৈধ রাসায়নিক গুদামের তালিকায় আলম ট্রেডার্স-এর নাম আগে থেকেই ছিল। প্রতিষ্ঠানটিকে তিনবার নোটিশ দেওয়ার পরও তারা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।
এমএমআই/জেএইচ