অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর খালপাড়ের রাস্তা প্রশস্ত হবে, ভালো হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা- এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দিনব্যাপী খালপাড় ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া যায়।
খালটি শুরু থেকে প্রায় ১শ ফুট চওড়া থাকলেও, দুই-তিন বছর আগে ঢাকা ওয়াসা ৩০ ফুট নির্ধারণ করে সীমানা প্রাচীর দিয়েছে। সেই প্রাচীরও দখলদারদের পেটে ঢুকেছে।
খালের জায়গা দখল করে চা, বিস্কুটের দোকান করেছেন মো. জাকির হোসেন। রোববার (২২ জানুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ঘোষণা দিয়েছে, নন্দীপাড়া থেকে ত্রিমোহনী ব্রিজ পর্যন্ত খালপাড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
ডিএসসিসি’র এ ঘোষণা টিভি ও পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন দোকানদার জাকির হোসেন। তিনি অনেকটা স্বস্তির সঙ্গেই বলেন, উচ্ছেদ হলে আমগো লেইগা বালা (ভাল)। বালা না? কী কন রাস্তা বড় অইবো, জায়গার দাম বাড়বো।
তিনি বলেন, সরকারি জায়গায় দোকান করে বইসা আছি। সরকার চাইলে উঠাই দিতে পারে। আমার কি অইবো। একটা মিস্ত্রি আর একটি লেবার লাগাইয়া দিমু, এক ঘণ্টার মধ্যে দোকান সরাইয়া ছাপ (সাফ) করে দিমু।
তার মতোই খালের পশ্চিম পাড়ে সারি সারি দোকান বসানো হয়েছে। কোথাও পাঁকা, কোথাও টিনের ছাপড়া ঘর, কোথাও আবার পাঁচতলা ভবন গড়ে তোলা হয়েছে।
নন্দীপাড়া বাজার থেকে ত্রিমোহনী ব্রিজ পর্যন্ত খালের উত্তর-পশ্চিম পাড়ে ছোট-বড় কয়েকশো দোকান গড়ে তোলা হয়েছে। খাল পাড়ের যে সড়কটি নন্দীপাড়া বাজার থেকে ব্রিজ পর্যন্ত গেছে, তার অবস্থাও নাজুক। রাস্তার দুই পাশ ঘেঁষে শত শত দোকান।
যে কয়েকফুট রাস্তা রয়েছে তা দিয়ে একটি রিকশা গেলে আরেকটি মাইক্রো অতিক্রম করা কষ্টকর। রাস্তার অনেক জায়গায় খোয়া, বালি উঠে গেছে। তাই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। খাল পাড়ের কাঠের দোকানদার খান সাহেব বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি জায়গা পড়ে রয়েছে তাই দোকান করেছি। এখন সরকারি জায়গা সরকার উচ্ছেদ করবে আমাদের কী করার আছে। তবে খবরে শুনেছি, এখনও নোটিশ পাইনি, দেখি নোটিশ দেয় কিনা?
নন্দীপাড়া জেলা পরিষদ মার্কেট সংলগ্ন ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে কথা হয় আমির হোসেন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার সঙ্গে।
তিনি বলেন, মেয়র যদি উচ্ছেদ করে আমরা এলাকাবাসী স্বাগত জানাবো। তবে উচ্ছেদ আগেও কয়েকবার হয়েছে, পরে আবারও দখল হয়ে যায়। তাই এবারও উচ্ছেদের পর পুনর্দখল হওয়ার শঙ্কা রয়ে যায়।
খালের বাস্তব চিত্র দেখতে বাংলানিউজ টিম সারাদিন নন্দীপাড়া এলাকা ঘুরে বেড়িয়েছে। দোকান ও বসতবাড়ি এমনভাবে গড়ে উঠেছে, তাতে মনেই হয়নি আজ থেকে চার-পাঁচ বছর আগে এই খাল দিয়ে নৌকা চলাচল করতো। খালে নানা প্রজাতির মাছ ধরা পড়তো।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৭
এসএম/এসএনএস