সোমবার (২১ জানুয়ারি) নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
পড়ুন>>কাজ ফেলে রাখা যাবে না, দ্রুত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা। গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এরপর তরুণ-প্রবীণদের নিয়ে নতুন এই মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়।
বৈঠকের একাধিক সূত্র বলছে, বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেন, আমি আগের মন্ত্রিসভার অনেক বড় পরিবর্তন এনে নতুন মন্ত্রিসভা করেছি। এর আগে কোনো মন্ত্রিসভায় এতো বড় পরিবর্তন আসেনি, কেউ এতো বড় পরিবর্তন করেনি। আমি নতুনদের মন্ত্রিসভায় এনেছি। আপনাদের উপর যে আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে মন্ত্রিসভায় এনেছি, আশা করি আপনারা সততা ও নিষ্ঠা নিয়ে প্রমাণ করবেন যে আপনাদের উপর আমার আস্থা ও বিশ্বাস সঠিক ছিলো।
‘আর যদি সেটা না করতে পারেন তবে আমার উদ্দেশ্য সফল হবে না। অনেকে নানা কথা বলবে, শুনতে হবে অনভিজ্ঞদের নিয়ে আসার কারণে এটা হয়েছে। এ কারণে আপনারা সততা রেখে চলবেন। বিত্ত, বৈভব অনেক করতে পারবেন। কিন্তু সেটা করতে গেলে পচে যাবেন। ’
বৈঠকের একাধিক সূত্র জানায়, বৈঠকে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়াকে ঘিরে বঙ্গবন্ধুর নামে মডেল সিটি করার প্রস্তাব করেন।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বিশ্বের ২০টির মতো দেশে স্বাধীনতার নায়ক এবং জাতীয় নেতা যার নেতৃত্বে ওই সব দেশ প্রতিষ্ঠিত হয় সেসব দেশে তাদের নেতার নামে সিটি আছে। ভিয়েতনামে হো চি মিনের নামে হো চি মিন সিটি, যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ওয়াশিংটনের নামে ওয়াশিংটন সিটিসহ অনেক দেশেই জাতির পিতার নামে সিটি আছে।
‘আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে কোনো সিটি নেই। বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান টুঙ্গীপাড়াকে ঘিরে একটি মডেল সিটি করে বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ করা যেতে পারে। ’
সভায় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ চট্টগ্রামে যে কর্ণফুলী টানেল করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর নামে সেটির নামকরণ করার প্রস্তাব করেন। এছাড়া প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কমংসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ সিলেটে নির্মাণাধীন একটি বড় রাস্তা বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ করার প্রস্তাব করেন।
বৈঠকের সূত্রগুলো জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গাড়িতে জাতীয় পতাকা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। সেই সঙ্গে তিনি বছরে একটি দিনকে প্রবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করারও প্রস্তাব দেন।
তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই প্রস্তাবে দ্বিমত পোষণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জাতীয় পতাকা ব্যবহার কেন উন্মুক্ত করা হবে? এটা করে কি রাজাকারদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে হবে। বরং আমি মনে করি সবার গাড়িতে জাতীয় পতাকা ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কেউ জাতীয় পতাকা ব্যবহার করবে না।
বৈঠকে প্রায় সকল মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী তাদের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
এসকে/এমএ