‘রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা: বাংলাদেশে জটিল মানবিক জরুরি অবস্থা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার বক্তব্যে এমন তাগিদ দেন কুক।
রোববার (২৭ জানুয়ারি) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস আয়োজিত এ সভায় রোহিঙ্গা বিষয়ে গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন ডি বি কুক।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করা এ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার খুব দারুণভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে। সমস্যার একদম শুরুতে সরকার, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও এবং দাতা সংস্থাগুলো যেভাবে ‘রেসপন্স’ করেছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। স্থানীয় জনগণ ও রোহিঙ্গাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তবে এখন সময় এসেছে লোকাল কমিউনিটিকে আরো এগিয়ে আসার।
নিজের গবেষণা নিয়ে দেওয়া এক উপস্থাপনায় কুক বলেন, বাসস্থান হারানো এ মানুষগুলোকে প্রয়োজনের তুলনায় কম সাহায্য সহযোগিতা করা হয়েছে। আশ্রয় দেওয়া দেশ এবং আশ্রয় নেওয়া এ মানুষগুলোর দু’দিকের জন্যই নীতিমালার উন্নতি করতে হবে। সাহায্য প্রার্থীরা কেমন সাহায্য পেলেন সেই বিষয়ে তাদের মতামত গ্রহণের একটি সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আরো বেশি সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য ক্যাম্প কমিটিগুলোকে নতুন করে গঠন করতে হবে। যেন তারা তাদের সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক এবং লিঙ্গ বৈষম্যহীন ভিত্তিতে নিতে পারেন।
কুক জানান, গবেষণার জন্য ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন দাতা সংস্থা এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত আছেন এমন প্রায় ২০ জন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেন তিনি।
উপস্থাপনা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে কুক বাংলানিউজকে বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা শুরুর পর থেকে খুবই অল্প সময়ে মানবিক পরিস্থিতি জটিল ও জরুরি অবস্থা ধারণ করেছে। আমি আমার গবেষণায় দেখেছি স্থানীয় কমিউনিটির সঙ্গে রোহিঙ্গাদের 'এনগেজমেন্ট' কম। দুই পক্ষের স্বার্থের জন্যই নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ এবং সহায়তা বাড়াতে হবে। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোকে এক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ম. তামিম। তিনি বলেন, আমাদের দেশে শরণার্থী বিষয়ক কোন সুনির্দিষ্ট আইন নেই। শরণার্থীরা যে একটি দুর্যোগ হতে পারে এবং এ বিষয়ে একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা জাতীয় কিছু থাকতে পারে সে ধারণাই আমাদের ছিল না। এ গবেষণা আমাদের এ ধরনের সমস্যা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দেবে বলে আমি আশা করি।
সভায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, জাতিসংঘ, অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল, ইউএসএইডসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা এবং গবেষক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সমাজবিজ্ঞান, আইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং সাংবাদিকতা খাতের বিভিন্ন গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা জানুয়ারি ২৭, ২০১৯
এসএইচএস/এসএইচ