ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রংপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
রংপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

রংপুর: রংপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী সোহেল রানার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু দমন নির্যাতন ট্রাইবুন্যাল আদালতের বিচারক মোস্তফা কামাল এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি সোহেল রানা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত সোহেল নগরীর ধাপ মোহাম্মদপুর আটিয়াটারী এলাকার অহেদ আলীর ছেলে।

বিষয়টি জানিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট খন্দকার রফিক হাসনাইন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে সোহেল রানার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে একই এলাকার সুজা মিয়ার মেয়ে সুলতানা পারভীনের। পরে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের সুখের জন্য উপঢৌকন বাবদ নগদ ২০ হাজার টাকা ও সাংসারিক আসবাবপত্র দেন সুজা মিয়া। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরে বাবার বাড়ি থেকে আরও এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য সুলতানাকে চাপ দিতে থাকেন সোহেল ও তার পরিবার। সুলতানা তাতে রাজি না হওয়ায় তাকে শারীরিক নির্যাতন ও বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হতো। এক পর্যায়ে বিয়ের ছয় মাস পর সুলতানাকে তার বাবার বাড়িতে রেখে ঢাকায় চলে যান সোহেল। তবে মোবাইল ফোনে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতেন সোহেল।

ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ২৭ জুন রাতের খাবার খেয়ে সুজা ও তার মেয়েসহ বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। পরের দিন ভোরে মেয়ে সুলতানাকে ঘরে না পেয়ে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজখবর নিতে থাকেন সুজা। এ সময় সুলতানার ফোনও বন্ধ পান তারা। এক পর্যায়ে দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে থাকা সুলতানার মরদেহ উদ্ধার করেন স্বজনরা।

পরে সোহেল রানাসহ তার পরিবারের নয়জনকে আসামি করে মামলা করেন সুলতানার বাবা সুজা মিয়া। পরবর্তীতে তদন্তে অন্যদের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় শুধু সোহেল রানার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। প্রায় চার বছর মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকার পর বুধবার রায় ঘোষণা করা হয়। পরে কঠোর পুলিশী পাহারায় প্রিজন ভ্যানে করে তাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট খন্দকার রফিক হাসনাইন রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।