গুলশান কাযার্লয় থেকে: গুলশানের রাজনৈতিক কাযার্লয়ে ‘অবরুদ্ধ’ বিএনপির চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটনেতা খালেদা জিয়ার বাধা এখন কাভার্ড ভ্যান আর একটি জলকামান।
শুক্রবার (০৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় সরেজমিনে দেখা যায়, গুলশান-২ সেক্টরের ৮৬ নম্বর রোডে অবস্থতি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কাযার্লয়ের মূল ফটকের সামনে পুলিশি কড়াকড়ি অনেকটা শিথিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা পর্যন্ত কাযার্লয়ের মূল ফটকে হেলান দিয়ে ডজনখানেক নারী পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকলেও শুক্রবার এর সংখ্যা কমে পাঁচজনে নেমে এসেছে। মূল ফটক থেকে খানিকটা দূরে অবস্থান করছেন তারা।
অন্যদিন কার্যালয়ের সামনে পুরুষ পুলিশের দু’টি মানবপ্রাচীর থাকলেও শুক্রবার বিকালে তা দেখা যায় নি।
কার্যালয়ের আশপাশে বেশ কিছু সংখ্যক পুলিশ সদস্য অবস্থান করলেও গত ৬ দিনের তুলনায় তার সংখ্যা খুবই কম।
তবে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশের ক্ষেত্রে আগের মতোই কড়াকড়ি আরোপ অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, মূল ফটকের তালা অপসারণ ও পুলিশের সংখ্যা কমানো হলেও কার্যালয়ের থেকে ৩০ ফুট দক্ষিণে দৈত্যাকৃতির একটি জলকামান সড়কের ওপর এখনো আড়াআড়িভাবে রাখা আছে। ওই জলকামানের পাশে যে জায়গাটুকু অবমুক্ত রয়েছে সেখান দিয়ে খালেদা জিয়ার গাড়ি তো দূরের কথা একটি রিকশা পার করারও সুযোগ নেই।
অন্যদিকে, গুলশান কার্যালয়ে থেকে ১০ ফুট উত্তরে পুলিশের দুটি কাভার্ড ভ্যান এমনভাবে আড়াআড়িভাবে রাখা হয়েছে যে সেখান দিয়ে একজন মানুষ পার হওয়াই কঠিন।
খালেদা জিয়া তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে বাসা অথবা অন্য কোথাও যেতে চাইলেও ওই জলকামান এবং কাভার্ড ভ্যান তাকে আটকে দেবে।
সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নিজ বাসায় যাওয়ার প্রয়োজনে জলকামান ও কাভার্ড ভ্যানের ব্যারিকেড ভাঙবেন- এমনটিও ভাবতে পারছেন না তার দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ তার একান্ত সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, খালেদা জিয়ার বের হতে বাধা কোথায় তা আপনারা সরেজমিনে এসে দেখে যান।
তিনি বলেন, বাসায় ফেরার জন্য সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে যদি জলকামান ও কাভার্ড ভ্যানের ব্যারিকেড ভাঙতে হয় তাহলে আর গণতন্ত্র থাকে কোথায়?
তবে গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) নুরুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যদি বাসা ফিরতে চান তাহলে পুলিশের পক্ষ থেকে সবরকম সহযোগিতা দেওয়া হবে।
রাস্তার ওপর আড়াআড়িভাবে রাখা জলকামান ও কাভার্ড ভ্যান সরানো হবে কিনা জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নিরাপদে বাসায় ফেরার জন্য যা যা করার দরকার সবই করবে পুলিশ।
শনিবার (৩ জানুয়ারি) রাত ১১ টা ৪০ মিনিটে নিজ কাযার্লয়ে অবরুদ্ধ হওয়ার পর ৫ জানুয়ারি বিকাল ৩ টা ৪৫ মিনিটে অফিস থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন খালেদা জিয়া। এর পর ৪ দিন কেটে গেলেও আর বের হবার চেষ্টা করেন নি তিনি।
আস্তে আস্তে বাধাগুলো দূর হলেও নিজ কার্যালয় থেকে কবে তিনি বের হবেন সে ব্যাপারে কোনো কিছু বলছেন না কেউ।
বিএনপির একটি সূত্র বলছে, রাস্তার ওপর রাখা জলাকামান ও কাভার্ড ভ্যান দুটি না সরানো পর্যন্ত স্বেচ্ছায় নিজ কার্যালয় থেকে বের হচ্ছেন না খালেদা জিয়া।
ওখানে বসে থেকেই দেশবাসী ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করে যাবেন তিনি।
এরই মধ্যে সারা জীবন ভারতবিরোধী অবস্থান নেওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া টেলিফোন পেয়েছেন বিজেপি প্রধান অমিত শাহ’র।
গুলশান অফিসে ‘অবরুদ্ধ’ থেকে এ ধরনের আরো ফোন আশা করতেই পারেন রাজনৈতিকভাবে কিছুটা কোণঠাঁসা হয়ে পড়া খালেদা জিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৫