অভিযোগ উঠেছে আগের কমিটি বিলুপ্ত না করেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন প্রভাবিত হয়ে নতুন এ কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনা না করে দলের ত্যাগী ও পরীক্ষীতদের বাদ দিয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি উপজেলা কমিটির অনুমোদন দেওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এ নিয়ে জেলায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এছাড়াও নতুন এ কমিটি বাতিলের দাবিতে ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের আগের কমিটির সভাপতি এবিএম বাতেন ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান চৌধুরী আসাদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ রাজীব ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এরশাদ বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি অনুমোদন দিই। ওই কমিটিতে এবিএম বাতেনকে সভাপতি ও আসাদুজ্জামান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ওই কমিটির সব নেতাকর্মীরা সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। এরপর আমরা ১১ ডিসেম্বর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত হতে বলি। আগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার মধ্য দিয়ে সম্মেলন করে নতুন কমিটি অনুমোদনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
এ বিষয়ে আমরা রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী মহোদয় এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কয়েকবার আলোচনাও করেছি। হঠাৎ গত ৬ ফেব্রুয়ারি আমরা জানতে পারি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সাত সদস্য বিশিষ্ট গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন। ওই কমিটিতে যাদের নাম দেওয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
এসময় তারা দাবি করেন, আগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা না করে ও জেলা ছাত্রলীগের মতামত না নিয়েই গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির ক্ষেত্রে নগ্ন হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সম্মেলনের মাধ্যমে ওই উপজেলা কমিটি দিতে হবে। তা না হলে আমরা সাংগঠনিক ক্ষমতাবলে পাল্টাপাল্টি কমিটি দেবো।
গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের আগের কমিটির সভাপতি এবিএম বাতেনের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন টাকার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা এ কমিটি মানি না।
উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন অনুমোদিত কমিটির সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান রুবেল জানান, রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী মহোদয়ের ডিও লেটারে সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র থেকে আমাদের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একটি কুচক্রি মহল আমাদের কমিটি নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখনো পর্যন্ত ওই কমিটির অনুমোদন প্রকাশ করিনি।
বাংলানিউজের হাতে আসা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্যাডে ৬ ফেব্রুয়ারি অনুমোদিত গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নিচে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর কি তাহলে ভূয়া ? এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, আপনারা কোন প্যাড হাতে পেয়েছেন সেটি না দেখলে বুঝতে পারছি না। এরপর তিনি বিষয়টি এড়িয়ে কলটি কেটে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮
আরএ