ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘ক্ষমতায় থাকতে ধর্মকে ব্যবহার করছে রাজনৈতিক গোষ্ঠী’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৯
‘ক্ষমতায় থাকতে ধর্মকে ব্যবহার করছে রাজনৈতিক গোষ্ঠী’

ঢাকা: ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক গোষ্ঠী ধর্মের মতো স্পর্শকাতর বিষয়কে ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য ধর্মকে ব্যবহার করা নয়। কিন্তু রাজনৈতিক গোষ্ঠী তাদের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য ধর্মকে অপব্যবহার করছে।

বর্তমানে ধর্মকে অপব্যবহার করে মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় আহত ও নিহতদের প্রতি শোক ও সংহতি প্রকাশ অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন।

ড. কামাল বলেন, স্বাধীনতার অর্জনগুলো ধরে রাখতে সম্প্রীতির মূল্যবোধকে ছড়িয়ে দিতে হবে। ধর্মের ভিত্তিতে ঐক্যকে বিনষ্ট করা সংবিধান সম্মত না। অনেক ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করতে ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সংবিধানেও আছে ধর্মকে অপব্যবহার করা যাবে না। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সবধর্মের সঙ্গে সম্প্রীতি গড়ে তোলা। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, মানুষের সব অধিকারকে রক্ষা করতে হবে। ধর্মের নামে বৈষম্য আমাদের দেশে নাই।

অনুষ্ঠানে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, একটা জাতি কিভাবে এগুবে? বিদ্বেষ, ঘৃণা, বিভাজন করে কোনো জাতি আগায় না। আমাদের দেশে যেটা দেখছি, যখনই কোনো ঘটনা ঘটছে, আমরা একে অপরের প্রতি ঘৃণা ছড়াচ্ছি, বিদ্বেষ ছড়াচ্ছি, বিভাজন ছড়াচ্ছি। আমরা একে অপরকে খুনি, সন্ত্রাসী, এর দালাল, ওর দালাল আখ্যা দিচ্ছি। আমাদের যে ঘৃণা, বিদ্বেষ, বিভাজনের বক্তব্য, এটা থেকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন যে রাজনীতিটা কি হওয়া উচিত। বিভিন্ন দেশে নানা ধর্মের, নানা মতাদর্শের লোক আছে। এ যে বিভাজনের রাজনীতিকে উস্কে না দিয়ে আমরা জেসিন্ডার কাছ থেকে শিক্ষা নেই। মতবিরোধ থাকবে, সমালোচনা থাকবে কিন্তু সবাইকে এক করে, বিদ্বেষ, ঘৃণা না ছড়িয়ে রাজনীতিবিদদের কাছে আহ্বান থাকবে যে- আমরা ভালো জিনিসটা নেই।  

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিপ্রিয় এবং মানবতাবাদী। এটি ঠিক কথা। এটিকে মনে রেখেই বাংলাদেশের সরকার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছে এটা আমার কাছে ঠিক মনে হয়নি। মানবতা কি দেশে আছে? গুম, খুন, ক্রসফায়ার তো চলছেই। আর সবচেয়ে নির্দয় ঘটনা এখন যেটা ঘটছে রাস্তাঘাটে, বাসের থেকে ধাক্কা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে ফেলে হত্যা করা হচ্ছে। দু’টি বাসের চাপায় মানুষ মারা যাচ্ছে। তারপরও বাংলাদেশে মানবতা কি আছে। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে যতো আলোচনা সভা করবেন, যতো শোক প্রস্তাব রাখবেন, সবাই তাতে মানবতার কথা ও আদর্শের মডেল বলবে। কিন্তু আমাদের দেশে মানবতা চাষ করা হয় না, আমাদের দেশে হিংসার চাষ করা হয়।  

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৯
এমএএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।