ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘আমাকে হত্যা করে তারা নীল নকশা বাস্তবায়ন করবে’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২১
‘আমাকে হত্যা করে তারা নীল নকশা বাস্তবায়ন করবে’

নোয়াখালী: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পাওয়া গেছে, আমাকে হত্যা করে তারা নীল নকশা বাস্তবায়ন করবে। ’

বুধবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে নিজের ফেসবুক একাউন্টে স্ট্যাটাস দিয়ে এ কথা জানান তিনি।

 

ওই স্ট্যাটাসে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘২১-০৩-২০২১ তারিখ নোয়াখালী জেলহাজতে কারাবন্দি মিজানুর রহমান বাদলের সঙ্গে একরামুল করিম চৌধুরী ও জেহান দেখা করে একটা নতুন ছক তৈরি করেছে। নোয়াখালী ৫ আসনে শিউলি একরামকে এমপি করবে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব শাহাব উদ্দিন সাহেব পদত্যাগ করে মিজানুর রহমান বাদলকে চেয়ারম্যান করবে। কবিরহাট উপজেলায় সাবাব চৌধুরীরকে উপজেলার চেয়ারম্যান করা হবে। কবিরহাট পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রায়হান বুঝিয়েছে সে মন্ত্রীর লোক কিন্তু আসলে সে একরামুল করিম চৌধুরীর লোক তাই রায়হান কবিরহাট পৌরসভা মেয়র থাকবে এবং বসুরহাট পৌরসভায় আমাকে হত্যা করে ফখরুল ইসলাম রাহাতকে বসুরহাট পৌর মেয়র করা হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রীর স্ত্রী ও নিজাম হাজারীর সঙ্গে ফোন আলাপ করে তারা সিদ্ধান্ত করে।  

এটাই হচ্ছে তাদের নতুন ছক। ’

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের মধ্যে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা।  

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে আবদুল কাদের মির্জা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, ‘সাংবাদিক মুজাক্কিরকে নিজ হাতে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসী মিজানুর রহমান বাদল। তাকে শোন অ্যারেস্টের (গ্রেফতার দেখানো) জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় কোম্পানীগঞ্জে আগুন জ্বলবে। ’

একই দিন সকাল ১১টায় ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার হুমকি দেন আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েছি, গত সংসদ নির্বাচনে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে যেভাবে রাতের অন্ধকারে তার বাসা থেকে সিএমএইচে নিয়ে গেছে, সে রকম কিছু করার জন্য আজ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন ওবায়দুল কাদের সাহেব, ওনার স্ত্রীর প্ররোচনায়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি দেশবাসীকে জানিয়ে দিচ্ছি, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমি সঙ্গে সঙ্গে আত্মহত্যা করব। আমার ওপর যদি কিছু ঘটাতে আসেন, আমি বলে দিচ্ছি, আমি আত্মহত্যা করব। আমি কোনো অসত্যের কাছে মাথা নত করব না। ’

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের মধ্যে বিরোধ চলছে। এর জের ধরে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে। চলমান বিরোধের জের ধরে ৯ মার্চ বসুরহাট পৌরসভার সামনে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আলাউদ্দিন নামে এক অটোরিকশাচালক। এসময় আরও ১২ জন গুলিবিদ্ধ হন। ১৪ মার্চ দুপুরে আলাউদ্দিনের ছোট ভাই এমদাদ হোসেন ওরফে রাজু সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন।

একই বিরোধের জের ধরে এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটে। পুলিশও কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে ত্রিমুখী সংঘর্ষের মুখে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন সাংবাদিক মুজাক্কিরসহ সাত-আটজন। পরে ২০ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাত পৌনে ১১টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুজাক্কির।

ওই ঘটনায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে মুজাক্কিরের বাবা নোয়াব আলী মাস্টার বাদী হয়ে অজ্ঞাত একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  
বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২১
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।