রংপুর: ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শামছুল আলম বলেছেন, বৈষম্যহীন ও নৈতিক সমাজ গঠনে ইসলামি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। সময়োপযোগী ও দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে এ লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়।
রোববার (১১ মে) দুপুরে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে ‘মাদরাসা শিক্ষার মানোন্নয়ন’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন উপাচার্য।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, মাদরাসা শিক্ষায় আধুনিক, যুগোপযোগী ও ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয় রয়েছে, যা একটি আদর্শ সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে ধর্মীয় শিক্ষার অবদান অপরিসীম। তাই সমাজ ও রাষ্ট্রের স্বার্থেই মাদরাসা শিক্ষার্থীদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
উপাচার্য প্রফেসর ড. শামছুল আলম আরও বলেন, আমরা চাই, মাদরাসাগুলো থেকে এমন আলেম ও জনশক্তি তৈরি হোক, যারা সমাজের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখবেন। বিশ্ববিদ্যালয় খুব শিগগিরই সেশনজট মুক্ত হবে। কোর্স কারিকুলাম সময়োপযোগী ও মানসম্মত করা হচ্ছে এবং উচ্চতর গবেষণার সুযোগও সৃষ্টি করা হচ্ছে।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ও ট্রেজারার এ এস এম মামুনুর রহমান খলিলী।
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বলেন, জাতি গঠনে মাদরাসা শিক্ষাই মূল ভূমিকা রাখতে পারে। এখানে পার্থিব ও পরকালীন—উভয় শিক্ষার সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থাকে ভিত্তি ধরে দেশে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন—এ বিষয়ে আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবু জাফর খান। তিনি বলেন, মাদরাসাগুলোতে আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে হবে। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে উচ্চতর ডিগ্রির পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কামিল (স্নাতকোত্তর) শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ অলী উল্যাহ, কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শাযাআত উল্লাহ ফারুকী, রেজিস্ট্রার মো. আইউব হোসেন এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী বক্তব্য দেন।
সভায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন মাদরাসার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষরা বলেন, মাদরাসাগুলোতে সরকারি বরাদ্দ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। পাশাপাশি শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
তারা অভিযোগ করেন, বিগত সরকারের আমলে চাকরিসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। সবক্ষেত্রে যোগ্যতার ভিত্তিতে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সুযোগ নিশ্চিত করার দাবিও জানান তারা।
মতবিনিময় সভায় রংপুর বিভাগের ১৭৮টি মাদরাসার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষরা অংশ নেন।
এসআরএস