ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ৩০ মে ২০২৫, ০২ জিলহজ ১৪৪৬

সারাদেশ

পচে নষ্ট হচ্ছে হাজারো মেট্রিক টন আলু, লোকসানে কৃষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:১৪, মে ২৯, ২০২৫
পচে নষ্ট হচ্ছে হাজারো মেট্রিক টন আলু, লোকসানে কৃষক

চলতি মৌসুমে রংপুর মহানগরীসহ এ অঞ্চলের পাঁচ জেলায় আলুর চাষ হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ। তবে এবার দাম ভালো না পাওয়ায় লাভের পরিবর্তে লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা।

অন্যদিকে আলু বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা না থাকায় ও আলু রাখার সংরক্ষণাগারের অভাবে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। ফলে রংপুর মহানগরীসহ জেলা ও এ অঞ্চলের পাঁচ জেলায় পচে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার মেট্রিক টন আলু। এতে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা।

রংপুর মহানগরীর তামপাট এলাকার মুসা মিয়া ও নুরুল ইসলামসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, এবার আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। না পারছি ফেলে দিতে, না পারছি সংরক্ষণ করতে। কী করব বুঝতে পারছি না। দামও নেই। সরকার যদি বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতো তাহলেও তারা কিছুটা হলেও উপকৃত হতেন।

কৃষি বিভাগ বলছেন, চলতি বছর রংপুর অঞ্চলে ১ লাখ ১ হাজার ৫৭৬ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। এতে উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৬৮২ মেট্রিক টন। এ বিভাগের কর্মকর্তারা আলু প্রসঙ্গে আশার কথা শোনাতে না পারলেও জানান রপ্তানির চেষ্টা চলছে।

সরেজমিনে জানা যায়, এ বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় আলু সংরক্ষণ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রংপুরের কৃষকরা। হিমাগারে স্থান সংকুলান না হওয়ায় কৃষকের বাড়িতেই আলু পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।  

হিমাগারে জায়গা না পাওয়ায় অনেকে ঘরেই আলু সংরক্ষণ করেছেন। ফলে যথাযথ নিয়মে আলু রাখতে না পারায় কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষকের বাড়ির গোয়াল ঘর, উঠান, পুকুর পাড় সর্বত্রই আলুর স্তূপ। আলু দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকার কারণে পচন ধরে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।

কৃষকরা জানান, টাকা খরচ করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উৎপাদিত আলু এখন গলার কাটায় পরিণত হয়েছে। এর প্রতিকার কি? এমন অবস্থায় কৃষকদের কোনো আশার কথা শোনাতে না পারলেও বরাবরের মতো দায়সারা উত্তর কৃষি বিভাগের।

নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে কৃষি বিভাগের কয়েকজন বলেন, আমরা কৃষকদের এবার আলু আবাদে নিরুৎসাহিত করেছিলাম কিন্তু তাদের থামাতে পারি নাই। কারণ গত বছর আলুতে বেশি লাভ হওয়ায় এবার সবাই আলু চাষে মনোযোগ দিয়েছিল, তাই এখন সবাই এর ফল ভোগ করছে।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি বছর রংপুর অঞ্চলে ১ লাখ ১ হাজার ৫৭৬ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। আর উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৬৮২ মেট্রিক টন। সংরক্ষণাগারের অভাবে কৃষকরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে তিনি জানান।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।